ভিজে যাই আমি

শাহ জামাল উদ্দিন

দূরের আকাশ তুমি
যখনই কাঁদো ভিজে যাই আমি ।

ভেবেছিলাম শৈশবের
সুখময় রূপালি পয়সা তুমি
রমনীয় ঝারবাতি ।

অবশেষে তামাটে মুখ নিয়ে
নৈরাশ্যের কালোফুল দিয়ে যাবে তুমি ?

তাহলে কি হতাশার রন্ধ দিয়ে
বাকি দিনগুলো দেখবো তোমাকে আমি ?

দুরের আকাশ তুমি
যখনই কাঁদো ভিজে যাই আমি ।

আমার পাখি

শাহ জামাল উদ্দিন

আমার আছে একটি পাখি, নাম দিয়েছি " পরানপাখি "
তারই খুশি তারই হাসি দিনেরাতে খুঁজতে থাকি
গায়ের গন্ধ নিয়ে দেখি এ যে আমার
সেই দিনের সেই হলদে পাখি ।

আমার জন্য পার হয়েছে কত কত দুঃখ নদী
ক্লান্ত যে তার ডানা দুটি
কষ্টে আছে আমার পাখি ।

যখন আমি ডুবতে থাকি
শক্তি দিয়ে টেনে তুলে আমার পাখি
যখন আমি কষ্টে থাকি
ঠোঁটে করে নিয়ে আসে মিষ্টি হাসি ।

সুখের সময় তাইতো আমি হন্যে হয়ে খুঁজতে থাকি
কোথায় আমার পরান পাখি ।

আহ্লাদ

শাহ জামাল উদ্দিন

তোমার কথায় আমার শরীরে
শীত ঢেলে দেয় দুপুরের রোদ
দিনেদিনে কেন যেন
পড়ছি হেলে তোমার দিকে আহ্লাদে ।

চেনা নাই জানা নাই ,
ভালোবাসা শুধু ডানা ঝাপটায়
ফোঁটা ফোঁটা আদরের জল ছড়ায়
ঝুরঝুর সুখের পাপড়ি ঝরায়
তোমার কথায় ।

বেদনার পাখি দূরে সরে যায়
হলুদ তাল পাতা তেমন সবুজ হয়ে যায়
তোমার কথায় ।

নদী বলে-আমার নাম জানো তুমি
কোন নামে ডাকো আজো জানা হয়নি।

ভ্রমন শেষে দেখা হলো

শাহ জামাল উদ্দিন

এমন সময় এসেছো তুমি
যখন জীবনের সব ভালোবাসা ধ্যানমগ্ন থাকে
কিছু গোপন চিঠির ভিতরে
কামনা বাসনা নিঃশেষ হয়ে যায় পুড়ে পুড়ে ।

এই ছোট্ট একটা জীবনে দৌড়ে আর কতদূর যাবে
একটু পরেই বৃষ্টি নামবে
মধ্যরাতে ঝড় আসবে সামনে শুধু অন্ধকার
আর অন্ধকার দেখবে ।

ভালোবাসার এই দূরের পুকুরে
সাঁতার কাটবে কী করে
যদি তাপমাত্রা নেমে যায় হিমাঙ্কের নীচে
হটাৎ যদি দুইকূল ছাপিয়ে বান আসে
অথবা নিমিষে পুকুর শুকিয়ে যায় খররৌদ্রে ।

তুমি কি পারবে -
সুশীতল জল এনে দিতে সেই পুকুরে
তুমি কি পারবে গহন বর্ষার গান শুনাতে আমাকে
আমার সকল কবিতা
গচ্ছিত রাখবো তাহলে তোমার কাছে
"এতদিন কোথায় ছিলে ?"

কবি পরিচিতি

BanglaKobita

শাহ জামাল উদ্দিন ১৯৬২ সালের ১লা জানুয়ারী ফরিদপুর শহরে জন্মগ্রহন করেন। তার পৈত্রিক নিবাস বর্তমান গোপালগঞ্জ জেলার মুকসুদপুর উপজেলার দিগনগর গ্রামে। কিশোর বয়সে প্রাথমিক লেখাপড়া শুরু নিজ গ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। কয়েক বছর তিনি কুষ্টিয়া শহরে লেখাপড়া করেন।

১৯৭৭ সালে দিগনগর বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় হতে এস.এস.সি এবং ১৯৭৯ সালে সরকারি রাজেন্দ্র কলেজ বিজ্ঞান বিভাগ হতে এইচএসসি পাশ করেন। ১৯৮৪ সালে ফরিদপুর পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট হতে ১ম বিভাগে ডিপ্লোমা-ইন-ইঞ্জিনিয়ারিং (যন্ত্রকৌশল) পাশ করেন। প্রকৌশলী হিসেবে তিনি কতিপয় বেসরকারী প্রতিষ্ঠানে কয়েক বছর চাকুরী করার পর দুরারোগ্য ক্যান্সার ব্যাধিতে ( হজকিং লিম্ফোমা) আক্রান্ত হলে চিকিৎসারত অবস্থায় চাকুরী ছেড়ে দেন। বর্তমানে আল্লাহর অপার মহিমায় সুস্থ হয়ে ব্যবসার সাথে জড়িত আছেন। মূলত তিনি কবি। কবিতা লেখা তার পেশা নয়-নেশা। বর্তমানে তিনি নিরন্তর লিখে চলেছেন। “ স্বপ্নের সিঁড়ি আমার প্রথম ভালোবাসা ” এবং “ ছুঁয়ে দেখি ভোরের নদী ” তার প্রকাশিত গ্রন্থ। এছাড়াও কয়েকটি কবিতার বই প্রকাশের পথে। বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় লিখে চলেছেন এবং কতিপয় সাহিত্য সংস্কৃতি প্রতিষ্ঠানের সাথে জড়িত

ফেসবুক পেইজ

কবিতা আবৃত্তি