সাতাশ বছর আগের পাখি

শাহ জামাল উদ্দিন

এই দেখনা পাখির ছানা
চোখ খোলেনা
দুরের আকাশ কাছে এসে আদর করে
ছোট্ট পাখি আজ এসেছে আমার ঘরে ।

চড়ুইপাখি আসে ঘরে
ময়না টিয়া খাঁচার ভেতর নড়েচড়ে
তবু আমার এই পাখিটি মন' কাড়ে ।

মনে মনে দাদা বলে ডাক দিয়ে সে মিষ্টি হাসে
চোখের ভেতর চোখ রেখে সে তাকিয়ে দেখে
এ যেন সে খুঁজছি যাকে ।

বুকের কাছে নিয়ে দেখি
এ যে আমার সাতাশ বছর আগের পাখি
তার দিকে তাই চেয়ে থাকি ।

যুগে যুগে এমনি করে
অনেক পাখি আসবে যাবে আমার ঘরে
ইতিহাসের পাতা খুলে
নামটি আমার নিবে তুলে ।

এই ঘরেতে ছোট্ট পাখি আসবে যারা
তারাই আমার নয়ন তারা ।

ভালোবাসার ভরা উৎসব

শাহ জামাল উদ্দিন

কারো কারো রক্ত ঝরে হৃদয়ের উল্টো পাশে
ঘৃনার আঁচড়ে ভালোবাসা দিবসে ।

গন্ধহীন ফুল উচ্ছৃঙ্খল টাকা-পয়সা
ফুচকার ভেতরে পাওয়া যায় ভালোবাসা
পুঞ্জিভুত ক্রোধে ছুড়ে ফেলে মালা
না পাওয়ার কত বেদনা ।

তবু ভালোবাসা ফিরে আসে বারে বারে
বসন্তের টানে
তবুও ফুলের বেদনায় প্রকৃতির অশ্রু ঝরে এইখানে ।

এখানে এখনো আঁকা বাঁকা শিমুলের ডালে
ফুল ফোটে
ভালোবাসা তুমি পল্লবিত হও এই দেশে
প্রকৃতির ভরা উৎসবে ।

সবুজ মাটি

শাহ জামাল উদ্দিন

তোমাকে যে রাত্রি জাগতে হবে
আর আমার উচ্ছল উৎসব গুলো
কুড়িয়ে আনতে হবে
অতীতের সবুজ মাটি থেকে
আমাকে হারাতে না চাইলে ।

আমিও তাই করি-
কখনো হারাই না আমি
বারবার ফিরে যাই অতিতের কাছে
সবুজ মাটির কাছে ।

ইচ্ছে করেই নিজেকে ব্যার্থ করে দেই
ইচ্ছে করেই নিজেকে বিলুপ্ত করি
তারপর কবিতায় তোমার নাম লিখি ।

যখন আমার কথায় কোন শব্দ হয় না
তখন কারো স্পর্শে কেঁপে উঠি
কেউ একজন রাত্রি জেগে আছে আমি দেখি ।

তুমি কি সেই-
বুক ভরে যার সুগন্ধ নেই ।

আঠারো বছর ( কন্যার জন্য একজন পিতার ভাব�

শাহ জামাল উদ্দিন

আঠারো বছর তোমাকে রেখেছি
স্পর্ধার তিলক পড়িয়ে
ঘরে বাইরে যখন যেখানে
কখনো ভাবনার সমুদ্রে নৌকার মাস্তুলে
কখনো স্বপ্নের আকাশে তারাদের মাঝে
লতার পাতার মতন
চিন্তার ডালে ডালে সাজিয়েছি তোমাকে।

হাতের মুঠোর ভেতর রেখেছি
জোনাকির মত করে
জোছনা রাতের তারা নিভে গেলে
আলো দেখবো বলে ।

তুমি প্রজাপতি হয়ে উড়ে বেড়াবে
দিগন্ত থেকে দিগন্তে
তখন আমাকে তোমার পড়বে মনে ।

কবি পরিচিতি

BanglaKobita

শাহ জামাল উদ্দিন ১৯৬২ সালের ১লা জানুয়ারী ফরিদপুর শহরে জন্মগ্রহন করেন। তার পৈত্রিক নিবাস বর্তমান গোপালগঞ্জ জেলার মুকসুদপুর উপজেলার দিগনগর গ্রামে। কিশোর বয়সে প্রাথমিক লেখাপড়া শুরু নিজ গ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। কয়েক বছর তিনি কুষ্টিয়া শহরে লেখাপড়া করেন।

১৯৭৭ সালে দিগনগর বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় হতে এস.এস.সি এবং ১৯৭৯ সালে সরকারি রাজেন্দ্র কলেজ বিজ্ঞান বিভাগ হতে এইচএসসি পাশ করেন। ১৯৮৪ সালে ফরিদপুর পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট হতে ১ম বিভাগে ডিপ্লোমা-ইন-ইঞ্জিনিয়ারিং (যন্ত্রকৌশল) পাশ করেন। প্রকৌশলী হিসেবে তিনি কতিপয় বেসরকারী প্রতিষ্ঠানে কয়েক বছর চাকুরী করার পর দুরারোগ্য ক্যান্সার ব্যাধিতে ( হজকিং লিম্ফোমা) আক্রান্ত হলে চিকিৎসারত অবস্থায় চাকুরী ছেড়ে দেন। বর্তমানে আল্লাহর অপার মহিমায় সুস্থ হয়ে ব্যবসার সাথে জড়িত আছেন। মূলত তিনি কবি। কবিতা লেখা তার পেশা নয়-নেশা। বর্তমানে তিনি নিরন্তর লিখে চলেছেন। “ স্বপ্নের সিঁড়ি আমার প্রথম ভালোবাসা ” এবং “ ছুঁয়ে দেখি ভোরের নদী ” তার প্রকাশিত গ্রন্থ। এছাড়াও কয়েকটি কবিতার বই প্রকাশের পথে। বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় লিখে চলেছেন এবং কতিপয় সাহিত্য সংস্কৃতি প্রতিষ্ঠানের সাথে জড়িত

ফেসবুক পেইজ

কবিতা আবৃত্তি