গীতিকবিতা তুমি

শাহ জামাল উদ্দিন

আমি যদি না আসি তোমার কাছে
মানুষের ভিড় ঠেলে
তুমি এসো এক খন্ড মেঘে ভেসে
বেলে হাঁস হয়ে
আমি ঝাপ দিব বাতাসে তোমাকে সাথে নিয়ে ।

কখনো জলের ভেতর যদি
শাপলা অথবা রাজহাঁস হও তুমি
আমি ঝিলমিলে বুদবুদ হয়ে
যাবো তোমার কাছে কতটা দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে ।

বন্ধু তুমি ভালোবাসার গীতিকবিতা তুমি-
তোমার দারুণ কথাগুলো শুনবো আমি ।

তোমাকে ছাড়া চলতে যদি না পারি

শাহ জামাল উদ্দিন

তোমায় ছাড়া চলতে যদি না পারি
বিন্দু বিসর্গ এক করি
কোনটা নদী কোনটা পুকুর চিনতে যদি ভুল করি ।

ইস্টিশনে রেলগাড়ি উঠতে যদি না পারি
যদি দেখি অন্য গাড়ি
ঘুম জড়ানো চোখ দুটোকে
রুখতে যদি না পারি পথের মধ্যে ঘুমিয়ে পড়ি ।

কন্ঠ আমার রুদ্ধ করে
শত্রু যদি ঘিরে ধরে গুজব ছড়ায় চারিধারে ।

তাহলে কি ডাকবে তুমি পিছন ফিরে-
তাহলে কি হাতটা ধরে পৌঁছে দিবে কিছু দূরে
জীবন যদি পথ হারায়
হটাৎ যদি থমকে দাঁড়ায় ।

শৈশবের বাগানে

শাহ জামাল উদ্দিন

আজ তুমি বললে, " কোথায় ছিলে ? "
গিয়েছিলাম ফুল কুড়াতে শৈশবের বাগানে
দেখলাম সেই মেয়ে
আজো মালা গাঁথে আমার জন্যে !

তারপর যৌবনের অলিন্দে দাড়িয়ে দেখলাম
সেখানেও সেই মেয়ে
এখনো গান গায় তার উঠোনে বসে আনমনে
ছুল বাঁধার ছল করে
আমাকে দেখে আড়চোখে ।

তুমি কি সেই মেয়ে এখনো যে খুঁজছে আমাকে
তার জ্বলজ্বল চোখে
আমার ভাঙা হৃদয় ফিস্ ফিস্ করে সে কথাই বলে ।

আজ তুমি বললে, " কোথায় ছিলে ? "
গিয়েছিলাম ফুল কুড়াতে শৈশবের বাগানে
দেখলাম সেই মেয়ে
আজো মালা গাঁথে আমার জন্যে !

কিছুটা বদলে দাও

শাহ জামাল উদ্দিন

আজ তুমি আমাকে কিছুটা বদলে দাও
আমার যা কিছু ভুল ছিল
সবগুলো ভুল শুধরে দাও।

আবার আমি বর্ণমালার নদীতে
নামতার নৌকায় চড়ে
শৈশব পার করবো তোমাকে নিয়ে ।

কৈশরে যাবে তুমি আমাকে নিয়ে
কাশফুলের সাথে পরিচয় করবে নতুন করে
কচুরীপানার ফুলগুলো তুলবো
আমরা দুজনে একসাথে ।

যৌবনের জরুরী চিঠিগুলো
পড়ে পড়ে শুনাবে আমাকে
যে গুলো পুরনো বাক্সের ভিতরে
আজও অখোলা রয়ে গেছে ।

ছিলাম আমি এতদিন অভিভাবকহীন
গোলাপের রঙ
ভালোভাবে দেখায়নি আমাকে
কেউ কোনদিন
ঘাসফুলের কাছে যেতে যেতে
কেটে গেলো বহুদিন
তুমিই এখন আমার বুকের প্রথম ভায়োলিন ।

কবি পরিচিতি

BanglaKobita

শাহ জামাল উদ্দিন ১৯৬২ সালের ১লা জানুয়ারী ফরিদপুর শহরে জন্মগ্রহন করেন। তার পৈত্রিক নিবাস বর্তমান গোপালগঞ্জ জেলার মুকসুদপুর উপজেলার দিগনগর গ্রামে। কিশোর বয়সে প্রাথমিক লেখাপড়া শুরু নিজ গ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। কয়েক বছর তিনি কুষ্টিয়া শহরে লেখাপড়া করেন।

১৯৭৭ সালে দিগনগর বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় হতে এস.এস.সি এবং ১৯৭৯ সালে সরকারি রাজেন্দ্র কলেজ বিজ্ঞান বিভাগ হতে এইচএসসি পাশ করেন। ১৯৮৪ সালে ফরিদপুর পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট হতে ১ম বিভাগে ডিপ্লোমা-ইন-ইঞ্জিনিয়ারিং (যন্ত্রকৌশল) পাশ করেন। প্রকৌশলী হিসেবে তিনি কতিপয় বেসরকারী প্রতিষ্ঠানে কয়েক বছর চাকুরী করার পর দুরারোগ্য ক্যান্সার ব্যাধিতে ( হজকিং লিম্ফোমা) আক্রান্ত হলে চিকিৎসারত অবস্থায় চাকুরী ছেড়ে দেন। বর্তমানে আল্লাহর অপার মহিমায় সুস্থ হয়ে ব্যবসার সাথে জড়িত আছেন। মূলত তিনি কবি। কবিতা লেখা তার পেশা নয়-নেশা। বর্তমানে তিনি নিরন্তর লিখে চলেছেন। “ স্বপ্নের সিঁড়ি আমার প্রথম ভালোবাসা ” এবং “ ছুঁয়ে দেখি ভোরের নদী ” তার প্রকাশিত গ্রন্থ। এছাড়াও কয়েকটি কবিতার বই প্রকাশের পথে। বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় লিখে চলেছেন এবং কতিপয় সাহিত্য সংস্কৃতি প্রতিষ্ঠানের সাথে জড়িত

ফেসবুক পেইজ

কবিতা আবৃত্তি