সময়ের অজস্র পাতা

শাহ জামাল উদ্দিন

সময়ের অজস্র পাতা ঝরে গেছে এতদিনে
শিউলি ফুলের মতন কথার ফুলগুলি ছড়িয়ে
পড়েছে মাটিতে
একা একা বসে আছি ঝরা পাতার নিঃসর্গে ।

যদি কোন গোপন রত্রিতে
একটি পাখি এসে বসে এই বাগানে
তাকে আমি নিয়ে যেতাম আমার
চেতনার প্রত্যান্ত প্রদেশে -ভালোবেসে।

তোমাকে সুন্দর দেখি

শাহ জামাল উদ্দিন

খালি চোখে তোমাকে সুন্দর দেখি প্রজাপতি
অযথা রঙিন চশমা পরি ।

তোমার খানিক আলোতে তারা যারা কবিতা লিখে
আমিও তাদের সাথে দেখি তোমাকে
কবিতা লিখি দিনে রাতে ।

রাতের বাতাসে সকালে সবুজ ঘাসে
তারাদের অল্প আলোতে
তোমাকে দেখি খালি চোখে সুন্দর লাগে ।

নদীর মৃদু ঢেউয়ের মত তোমার শরীর দোলে
আমি দেখি শেষ বিকেলে প্রত্যেক ভোরে ।

খালি চোখে তোমাকে সুন্দর দেখি প্রজাপতি
অযথা রঙিন চশমা পরি ।

খাতার ভেতর

শাহ জামাল উদ্দিন

এই আষাঢ়ে ভেলায় চড়ে সেই মেয়েটি
আবার যদি আসতো কাছে
আমার খাতার পাতার ভেতর
আবার যদি পাপড়ি গুলো গুছিয়ে সে রাখতো এসে ।

চুল বাধাঁর ঐ ছল করে সে আবার আমায়
আড় চোখেতে দেখতো হেসে ।

এখন দেখি আয়না থেকে বের হয়ে সে
যায় যে চলে অন্য পথে
আর আসেনা আর ডাকেনা একলা পেয়ে
সেই যে মেয়ে ।

কথা হতো মালার সাথে

শাহ জামাল উদ্দিন

আমার হলুদ স্বপ্নের সুতায় গাঁথা
একজন মালা
আমার বিশেষ মুহুর্ত গুলো
আর হড্ডি মজ্জার ভেতরে যৌবনের বারুদ যত
নিয়ে গেছে সে
আমার শরিরে জড়ানো শিকড়ের বেদনা কত !

মনে পড়ে বদলেছে সে বারে বারে
কখনো শিউলি কখনো বকুল
অথবা গন্ধরাজ অথবা ভোরের কনকচাঁপা
কখনো সে হলুদ কলমি লতা
নীল ঘাসফুল ।

যেন সে ছিল সোনার সুতায় গাঁথামালা
শুনেছি আমি
তবু তার বেদনার কথা ।

ছুঁয়ে দেখা গন্ধ নেওয়া-
হাতে করে ঘুমিয়ে পড়া সেই মালা
এখন চেয়ে চেয়ে দেখি শুধু তার শুকিয়ে যাওয়া ।

কবি পরিচিতি

BanglaKobita

শাহ জামাল উদ্দিন ১৯৬২ সালের ১লা জানুয়ারী ফরিদপুর শহরে জন্মগ্রহন করেন। তার পৈত্রিক নিবাস বর্তমান গোপালগঞ্জ জেলার মুকসুদপুর উপজেলার দিগনগর গ্রামে। কিশোর বয়সে প্রাথমিক লেখাপড়া শুরু নিজ গ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। কয়েক বছর তিনি কুষ্টিয়া শহরে লেখাপড়া করেন।

১৯৭৭ সালে দিগনগর বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় হতে এস.এস.সি এবং ১৯৭৯ সালে সরকারি রাজেন্দ্র কলেজ বিজ্ঞান বিভাগ হতে এইচএসসি পাশ করেন। ১৯৮৪ সালে ফরিদপুর পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট হতে ১ম বিভাগে ডিপ্লোমা-ইন-ইঞ্জিনিয়ারিং (যন্ত্রকৌশল) পাশ করেন। প্রকৌশলী হিসেবে তিনি কতিপয় বেসরকারী প্রতিষ্ঠানে কয়েক বছর চাকুরী করার পর দুরারোগ্য ক্যান্সার ব্যাধিতে ( হজকিং লিম্ফোমা) আক্রান্ত হলে চিকিৎসারত অবস্থায় চাকুরী ছেড়ে দেন। বর্তমানে আল্লাহর অপার মহিমায় সুস্থ হয়ে ব্যবসার সাথে জড়িত আছেন। মূলত তিনি কবি। কবিতা লেখা তার পেশা নয়-নেশা। বর্তমানে তিনি নিরন্তর লিখে চলেছেন। “ স্বপ্নের সিঁড়ি আমার প্রথম ভালোবাসা ” এবং “ ছুঁয়ে দেখি ভোরের নদী ” তার প্রকাশিত গ্রন্থ। এছাড়াও কয়েকটি কবিতার বই প্রকাশের পথে। বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় লিখে চলেছেন এবং কতিপয় সাহিত্য সংস্কৃতি প্রতিষ্ঠানের সাথে জড়িত

ফেসবুক পেইজ

কবিতা আবৃত্তি