তোমাকে রেখে যাবো

শাহ জামাল উদ্দিন

তোমাকে রেখে যাব
কবিতার পাতায়, বসন্তের হওয়ায়
সমুদ্র ঢেউয়ে, দিগন্তে দূরন্ত মেঘের ভেলায় ।

তোমাকে রেখে যাব
পানকৌড়ি, নিশিবক, ছোটনাটা বটের
নীড়ের কাছে আর এক নীড়ে ।

তোমাকে রেখে যাব
নবান্নের উৎসবে, কার্তিকের ভরা ফসলের মাঠে
আর অলকানন্দা নদীর স্রোতে ।

তোমাকে রেখে যাব
শিশিরের নুপুর পায়ে, সবুজ ঘাসের নরম বিছানায়
কৃষ্ণচূড়া ডালে, হাছনাহেনার গন্ধে ।

আবার দেখা হবে হাজার বছর পরে
এই বংলায়, শান্তির নীড়ে ।

যা কিছু রেখে যাবো তোমার এখানে

শাহ জামাল উদ্দিন

এমন কিছু স্মৃতি রেখে যাবো তোমার এখানে
শুধু তোমাকেই হাসাবে শুধু তোমাকেই কাঁদাবে ।

যখন আলোর বৃষ্টি নামবে প্রভাতে
জোছনার প্রপাতে যখন তোমার একা একা মনে হবে
তখন সেখানে আমি যেন খুঁজছি তোমাকে ।

শীতের গভীর রাতে
যখন তোমার পা দু'টো হীম শীতল হয়ে যাবে
আমাকে তুমি খুঁজবে স্মৃতির উষ্ণ ঝরা পাতার নীচে
লুকিয়ে লুকিয়ে অনেক অভিমানে অভিমানে !

আমিও কত কিছু নিয়ে যাবো তোমার কাছ থেকে
ইশারায় ইশারায় কতবার ডেকেছিলে
তোমার করুনার আর্দ্রতা সমস্ত শরিরে নিয়ে যাবো মেখে
তোমার সরল হাতের স্পর্শ যাবো নিয়ে
আমার ঘরবাড়িতে তোমাকে রেখে ।

যদি রাগ করে মুছে ফেল সমস্ত ভালোবাসা
তবুও ফুরাবে না
আমার যাওয়াআসা তোমার মনের গভীরে।

আমার আছ তুমি

শাহ জামাল উদ্দিন

গ্রীষ্মে শ্রাবনের বৃষ্টি হয়ে
আমার চৌঁচির মাঠের বিরান ভূমিতে
ফলাও ফসল তুমি।

আমি তৃষ্ণার্ত হলে নদীর উৎসের কাছ থেকে
কলস ভরে জল এনে দাও তুমি
ফুরিয়ে যেতাম কবেই আমি
পরাজয়ের গ্লানি মুছে দিয়ে ব্যর্থ জীবন আমার
সযত্নে বদলে দিয়েছ তুমি।

চারপাশে যখন বিদ্ধস্ত নগরী ভয়ঙ্কর সুনামি
তখন বাড়িয়ে দাও হাত দুটি
বেঁচে থাকার অবলম্বন হয়ে যাও তুমি ।

আমার ছিল যত স্বপ্ন আর ভালোবাসা
বুক খালি করে নিয়ে গেছে লুটেরা
কতদিন পরে এসে
ফুলের গন্ধ দিয়ে খালি বুক ভরে দিলে তুমি ।

এখন তোমার মধ্যে থাকি দিনরাত্রি
তোমার নামের কবিতা লিখি আমার বন্ধু তুমি ।

লাল পরী

শাহ জামাল উদ্দিন

অভিমানীর সব কথা আজ নিয়ে এসেছি
আতপ্ত দুপুরে বেহাল শরিরে
অনেক ভারী -
বেদনার মত ভারী কষ্টের মত ভারী
সে আমার লাল পরী ।

তখন আমার চেতনার পাহারাদার
খবর রাখেনি তার
জীবন যৌবনে কত কিছু ছিল তার পাবার
গ্লানি গুলো বুকের গভীর থেকে উঠে আসে বারবার ।

এখন যখন সে প্রশ্ন করে -
ঘৃনার ঝাপটা এসে লাগে সমস্ত শরিরে
শীর্ণ নদীর মত এখনও সে অনেক কষ্ট বহন করে
আমাকে পাবার জন্যে কারনে অকারনে ।

কবি পরিচিতি

BanglaKobita

শাহ জামাল উদ্দিন ১৯৬২ সালের ১লা জানুয়ারী ফরিদপুর শহরে জন্মগ্রহন করেন। তার পৈত্রিক নিবাস বর্তমান গোপালগঞ্জ জেলার মুকসুদপুর উপজেলার দিগনগর গ্রামে। কিশোর বয়সে প্রাথমিক লেখাপড়া শুরু নিজ গ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। কয়েক বছর তিনি কুষ্টিয়া শহরে লেখাপড়া করেন।

১৯৭৭ সালে দিগনগর বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় হতে এস.এস.সি এবং ১৯৭৯ সালে সরকারি রাজেন্দ্র কলেজ বিজ্ঞান বিভাগ হতে এইচএসসি পাশ করেন। ১৯৮৪ সালে ফরিদপুর পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট হতে ১ম বিভাগে ডিপ্লোমা-ইন-ইঞ্জিনিয়ারিং (যন্ত্রকৌশল) পাশ করেন। প্রকৌশলী হিসেবে তিনি কতিপয় বেসরকারী প্রতিষ্ঠানে কয়েক বছর চাকুরী করার পর দুরারোগ্য ক্যান্সার ব্যাধিতে ( হজকিং লিম্ফোমা) আক্রান্ত হলে চিকিৎসারত অবস্থায় চাকুরী ছেড়ে দেন। বর্তমানে আল্লাহর অপার মহিমায় সুস্থ হয়ে ব্যবসার সাথে জড়িত আছেন। মূলত তিনি কবি। কবিতা লেখা তার পেশা নয়-নেশা। বর্তমানে তিনি নিরন্তর লিখে চলেছেন। “ স্বপ্নের সিঁড়ি আমার প্রথম ভালোবাসা ” এবং “ ছুঁয়ে দেখি ভোরের নদী ” তার প্রকাশিত গ্রন্থ। এছাড়াও কয়েকটি কবিতার বই প্রকাশের পথে। বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় লিখে চলেছেন এবং কতিপয় সাহিত্য সংস্কৃতি প্রতিষ্ঠানের সাথে জড়িত

ফেসবুক পেইজ

কবিতা আবৃত্তি