উষ্ণতা বেড়ে যায়

শাহ জামাল উদ্দিন

নাতিশীতোষ্ণ এই দেশে উষ্ণতা যায় বেড়ে
ঈদের বাজারে
যেন হ্যামিলনের বাশিঁ বাজে
ছুটে চলে দলে দলে
সার্ফএক্সেলের ধোয়া কাপড়ে
কেনাকাটা চলে রাতের গভীরে ।

তাদের মনের কাপড়ে যে কঠিন কঠিন
দাগ দেখা যায় মানবিক আয়নায়
এই সব নাই কারো ভাবনায় ।

সার্ফএক্সেলের ধোয়া কাপড়ে
কেনাকাটা চলে রাতের গভীরে ।

গরীব মানুষ

শাহ জামাল উদ্দিন

এই যে গরীব মানুষ তোমাকে দেখলে
আমার ফটোগ্রাফীর ইচ্ছে করে
বিহ্বল জনস্রোতে এই দুর্যোগ মুহূর্তে ।

এই যেমন যখন কষ্ট আর দুর্দশা ভরা তোমার শরিরে
তখন মনে করো
আমি হাত রেখেছি তোমার কাঁধে
উপহাস উঁকি দিবে ব্যাকগ্রাউন্ডে
তখন ভীষন দাতা হয়ে কিছু মোটা চাল দিচ্ছি
তোমার হাতে তুলে
গুঞ্জন হবে মানুষের মাঝে ফটো তুলবো একসাথে ।

আবার ধরো তুমি শুয়ে আছো শীতরাতে
খালিগায়ে ফুটপাতে
আমি স্বপ্নে দেখছি মোটা কম্বল গায়ে দিয়ে
ভাড়া করা ফটোগ্রাফার ফটো তুলছে অসংখ্য রাতে
তোমার ব্যক্তিগত শীত নিবারণের জন্যে
শীতবস্ত্র তুলে দিচ্ছি তোমার হাতে
বলে দিচ্ছি ফটোগ্রাফারকে শিল্পকলা থাকে যেন ফটোগ্রাফীতে ।

আবার হয়তো কোন দিন ঠাঠা রদ্দুরে দাঁড়াবো
তোমার পাশে চৌঁচির মাঠে
আর্টিফিশিয়াল বাতাস দিয়ে ঠান্ডা করবো তোমাকে
তখন ফটো তুলবো তুমি আর আমি একসাথে ।

এই যে গরীব মানুষ তোমাকে দেখলে
আমার ফটোগ্রাফীর ইচ্ছে করে
বিহ্বল জনস্রোতে এই দুর্যোগ মুহূর্তে ।

চকচকে চালাকি

শাহ জামাল উদ্দিন

চারিদিকে দেখি চকচকে চালাকি
তাদের শরিরের আগাগোড়া ভন্ডামি
আঁতাত করে চলি আমি ।

নিভে যায় যখন আমার ঘরের বাতি
আমি অন্ধকারের সাথে আঁতাত করি ।

দীর্ঘ বসন্তে আমার তাবৎ যৌবন
ফুরিয়ে যায় অল্পদিনে
আঁতাত করেছি প্রকৃতির সাথে ।

ডাল ভেঙে পড়ে না এখন বৈশাখে মাথার উপড়ে
চৈত্রে কিছুটা ঠান্ডা বাতাস পেয়ে যাই
সুবিধার ফাঁক ফোঁকর দিয়ে ।

সরলতার ভরা কৌঁটা ফেলে দিয়েছি
উশৃঙ্খল আবর্জনার ভেতরে
বেঁচে আছি আঁতাত করে সকলের সাথে ।

কারিগর

শাহ জামাল উদ্দিন

বাইরে পুরোকৌশল পুরো-দস্তর
ভেতরে সে যন্ত্রকৌশলের জটিল
ভাঙচুরের বিপদজনক শব্দ তৈরীর কারিগর ।

পকেটে ইঁদুর নিয়ে বেড়ায় হেঁটে
শলাপরামর্শের জন্য
তেলাপোকা উঠে আসে শরির বেয়ে
সবকিছু ঢাকা থাকে তার সাদা কাপরে ।

চকচকে চোখে মনোরম উৎসাহে
লোকগুলো হেঁটে আসে যখন আমার দিকে
আমার চোখ সবকিছু দেখে ফেলে
ভেঙেচুরে সহজে
যা আছে তাদের ভেতরে ।

বাইরে পুরোকৌশল পুরো-দস্তর
ভেতরে সে যন্ত্রকৌশল
ভাঙচুরের বিপদজনক শব্দ তৈরীর কারিগর ।

কবি পরিচিতি

BanglaKobita

শাহ জামাল উদ্দিন ১৯৬২ সালের ১লা জানুয়ারী ফরিদপুর শহরে জন্মগ্রহন করেন। তার পৈত্রিক নিবাস বর্তমান গোপালগঞ্জ জেলার মুকসুদপুর উপজেলার দিগনগর গ্রামে। কিশোর বয়সে প্রাথমিক লেখাপড়া শুরু নিজ গ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। কয়েক বছর তিনি কুষ্টিয়া শহরে লেখাপড়া করেন।

১৯৭৭ সালে দিগনগর বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় হতে এস.এস.সি এবং ১৯৭৯ সালে সরকারি রাজেন্দ্র কলেজ বিজ্ঞান বিভাগ হতে এইচএসসি পাশ করেন। ১৯৮৪ সালে ফরিদপুর পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট হতে ১ম বিভাগে ডিপ্লোমা-ইন-ইঞ্জিনিয়ারিং (যন্ত্রকৌশল) পাশ করেন। প্রকৌশলী হিসেবে তিনি কতিপয় বেসরকারী প্রতিষ্ঠানে কয়েক বছর চাকুরী করার পর দুরারোগ্য ক্যান্সার ব্যাধিতে ( হজকিং লিম্ফোমা) আক্রান্ত হলে চিকিৎসারত অবস্থায় চাকুরী ছেড়ে দেন। বর্তমানে আল্লাহর অপার মহিমায় সুস্থ হয়ে ব্যবসার সাথে জড়িত আছেন। মূলত তিনি কবি। কবিতা লেখা তার পেশা নয়-নেশা। বর্তমানে তিনি নিরন্তর লিখে চলেছেন। “ স্বপ্নের সিঁড়ি আমার প্রথম ভালোবাসা ” এবং “ ছুঁয়ে দেখি ভোরের নদী ” তার প্রকাশিত গ্রন্থ। এছাড়াও কয়েকটি কবিতার বই প্রকাশের পথে। বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় লিখে চলেছেন এবং কতিপয় সাহিত্য সংস্কৃতি প্রতিষ্ঠানের সাথে জড়িত

ফেসবুক পেইজ

কবিতা আবৃত্তি