মনের পাশে

শাহ জামাল উদ্দিন

বুকের কাছে মনের পাশে
হলদে পাখি আমার আছে ভালোবাসি শুধুই তাকে
ময়না টিয়া আশেপাশে সামনে দেখি ময়ূর নাচে
তবু আমার হলদে পাখি মন যে টানে ।

যখন আমি কষ্টে থাকি
কষ্টগুলো ভাগ করে নেয় আধাআধি
আমার বুকে মাথা রাখে দুঃখ পেলে
নৃত্য পাগল পা দুটো তার চলতে থাকে
উথালপাথাল ঝড় এলে ।

রাত্রি যখন ঘিরে রাখে অন্ধকারে এই আমাকে
জলভরা তার দু চোখ দেখে
জোছনা এসে আদর করে ।

বুক ভরে দেয় ভালোবাসার উপহারে এমনি করে
হলদে পাখি উড়ে আসে বারে বারে ।

গোল বারান্দা

শাহ জামাল উদ্দিন

অতীতের ফাঁক-ফোঁকরে তাকে খুঁজি
ইচ্ছে হয় ছুঁয়ে আসি
মাঝে মাঝে অলৌকিক ডাক শুনি ।

মনে পড়ে একসাথে কতদিন আমরা থেকেছি
গোল বারান্দার দোতালা বাড়ি
তাকে মনে করে খাতা খুলে গোলাপ এঁকেছি
রজনীগন্ধা গাছগুলোতে পনি ঢেলেছি
অথচ সে কখনো করুনায় আর্দ্র হয়নি ।

তারপর তার অভাব নিয়ে এতটা বছর
পথে পথে হেঁটেছি
কত কত দুঃখ নিয়ে এখানে এসেছি
বুকের ভেতর এখনো জমানো কত হাহাকার
তাকে কাছে পাবার ।

তার ছিল তখন অহংকারের অলংকার
আর আমার ভীরু সৌন্দর্য্যের চার পাশে অন্ধকার
কেউ জানল না সেও ছিল আমার ভালোবাসার ।

ফরেস্ট

শাহ জামাল উদ্দিন

হাত ধরে নিয়ে গেলাম তোমাকে
গুড়ি গুড়ি বৃষ্টিতে ভেজা পাতার কাছে ।

সেই নৌকা সেই চুপচাপ অরণ্য অচেনা শব্দ
আমার বাল্যকাল যেন নদীজলে ডুব দিয়ে উঠলো
তোমার হাত দুটো স্বাগত জানাল ।

তুমি আনন্দে পা ডুবালে গোয়াইন নদীর পানিতে
ওরা তোমার রঙ নিয়ে গেল খুশিতে
ঘনিষ্ঠ আকাশ দেখছিল মেঘ ছিল
ওয়াচ টাওয়ারের নীচে তুমি নৌকায় বসে ছিলে ।

কত বিপন্ন বিষ্ময় ভেসে যায় এ নদীর জলে
ভালোবাসার অর্ধেক চাঁদ দেখলাম
তোমার চোখে
বুকের ভেতরে এ কোন বৃষ্টি ঝরে অকারণে।

প্রজাপতি

শাহ জামাল উদ্দিন

আমি আজো দেখি সেই ছবি
মনে হয় তুমি
সন্ধ্যার বাতাসে উড়ে আসা প্রজাপতি
আগেকার সেই ত্রিশ বছর
সাথে করে হাঁটি দিন রাত্রি ।

ঘুমাবার আগে দেখি মন খারাপ হলে দেখি
তোমাকে আবার পাবার জন্য দেখি -- সেই ছবি ।

কবি পরিচিতি

BanglaKobita

শাহ জামাল উদ্দিন ১৯৬২ সালের ১লা জানুয়ারী ফরিদপুর শহরে জন্মগ্রহন করেন। তার পৈত্রিক নিবাস বর্তমান গোপালগঞ্জ জেলার মুকসুদপুর উপজেলার দিগনগর গ্রামে। কিশোর বয়সে প্রাথমিক লেখাপড়া শুরু নিজ গ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। কয়েক বছর তিনি কুষ্টিয়া শহরে লেখাপড়া করেন।

১৯৭৭ সালে দিগনগর বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় হতে এস.এস.সি এবং ১৯৭৯ সালে সরকারি রাজেন্দ্র কলেজ বিজ্ঞান বিভাগ হতে এইচএসসি পাশ করেন। ১৯৮৪ সালে ফরিদপুর পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট হতে ১ম বিভাগে ডিপ্লোমা-ইন-ইঞ্জিনিয়ারিং (যন্ত্রকৌশল) পাশ করেন। প্রকৌশলী হিসেবে তিনি কতিপয় বেসরকারী প্রতিষ্ঠানে কয়েক বছর চাকুরী করার পর দুরারোগ্য ক্যান্সার ব্যাধিতে ( হজকিং লিম্ফোমা) আক্রান্ত হলে চিকিৎসারত অবস্থায় চাকুরী ছেড়ে দেন। বর্তমানে আল্লাহর অপার মহিমায় সুস্থ হয়ে ব্যবসার সাথে জড়িত আছেন। মূলত তিনি কবি। কবিতা লেখা তার পেশা নয়-নেশা। বর্তমানে তিনি নিরন্তর লিখে চলেছেন। “ স্বপ্নের সিঁড়ি আমার প্রথম ভালোবাসা ” এবং “ ছুঁয়ে দেখি ভোরের নদী ” তার প্রকাশিত গ্রন্থ। এছাড়াও কয়েকটি কবিতার বই প্রকাশের পথে। বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় লিখে চলেছেন এবং কতিপয় সাহিত্য সংস্কৃতি প্রতিষ্ঠানের সাথে জড়িত

ফেসবুক পেইজ

কবিতা আবৃত্তি