স্পন্দন

শাহ জামাল উদ্দিন

বুকের স্পন্দনে কত ইচ্ছা এসে ভীর করে দিনেরাতে
নির্জন রাস্তায় দাড়িয়ে
জোছনায় আর কোন দিন দেখা হয় নাই সেই মেয়ে ।

আর কোন দিন সাথে নিয়ে তাকে
যাওয়া হয় নাই সমুদ্রে
আর কোন দিন সতেজ শরির নিয়ে
আহ্লাদে সন্ধায় হয়নি ফেরা ঘরে ।

তার অনুনয়ের ঘোমটা খুলে
আর কোন দিন দেখা হলোনা তাকে ছুঁয়ে ।

আর একবার যেতে ইচ্ছে করে
তার ভালোবাসার রাজ্যে নতজানু রাজা হয়ে ।

বুকের স্পন্দনে কত ইচ্ছা এসে ভীর করে দিনেরাতে ।

তোমাকেই দেখি

শাহ জামাল উদ্দিন

অতটা খারাপ হতে চাই নাই আমি
যতটা খারাপ বলছো তুমি
পৃথিবীর যত কষ্ট
কুড়িয়ে এনে তোমাকেই বুঝি দিয়েছি ?

বিশ্বাস করো আমারও ইচ্ছে করে তোমাকে
সুখের নাগর দোলায় চড়াতে
আর সেই গর্বের ভারে তোমার সামনে
নতজানু হয়ে বসে থাকতে।

দেখতো তোমারও কি কোন পাপ আছে !
যখন একলা চেয়ে থাক আকাশের দিকে
জোছনায় কত অমসৃন দেখা যায় তোমাকে
মনে হয় তুমি আকাশ থেকে
খসে পড়ছো নিচের দিকে ।

তোমার কষ্টের গর্জন তোমার বিরক্তি তোমার ঘৃনা
আর রান্না ঘরে তোমার বিষন্ন ভাবনা দেখে দেখে
তোমার হাতের সাদা রুটি আর
ডালভাতে অভ্যস্ত আমি-

বোকা চোখে চেয়ে থাকি আর শুধু
তোমাকেই দেখি ।

ছবি-২

শাহ জামাল উদ্দিন

অনেক বছর পরে একদিন হটাৎ যদি দেখি তোমাকে
সেই মাটির কাছে ফুরফুরে বাতাসে
আঁকবো তোমাকে ইচ্ছের রঙতুলিতে
তুমি ছিলে সেই
চপল ডানার দীগন্ত নীল পাখি
সাথে করে বয়ে বেড়াবো তোমার সুষমা আমি ।

অথবা অতীতের অথৈই সীমানায় ইতিহাসের
ছেড়া পাতায়
ভীষন কুয়াশায় তোমার কোন একদিনের
পুরনো ছবি পাই যদি
যত্ন করে রেখে দিবো আত্মার কাছাকাছি ।

অথবা পথ চলতে চলতে ক্লান্ত মানুষটির বিষন্ন ভরা মুখ দেখে
তোমাকে চিনে ফেলি
আমার দু'চোখের মধ্যে রেখে দিবো
পঞ্চাশ বছর আগেকার সেই কিশোরী।

চারিদিকে মরুভূমি
সেখানে আমার নিমগ্ন চোখ দেখে চিনেফেল যদি
এক অখন্ড রেখায় এঁকে নিয়ো
আমার বর্তমানের বিবর্ন ছঁবি ।

আবার যদি দেখা হয় রাতের কোন নিবিড় আয়োজনে
রুগ্ন গোলাপের মত পরিচর্যা করবো তোমাকে
তবুও এত বছর পরে ।

অনেক বছর পরে একদিন হটাৎ যদি দেখি তোমাকে
সেই মাটির কাছে ফুরফুরে বাতাসে
আঁকবো তোমাকে ইচ্ছের রঙতুলিতে
তুমি ছিলে সেই
চপল ডানার দীগন্ত নীল পাখি
সাথে করে বয়ে বেড়াবো তোমার সুষমা আমি ।

পরিযায়ী পাখি

শাহ জামাল উদ্দিন

তুমি পরিযায়ী পাখি আর আমি যাযাবর
দুরে দুরে থাকি দুর থেকে দেখি ।

তোমাকে ভালবাসি আমি
আর আমার সকল মুগ্ধতা আড়াল করে রাখে এই পৃথিবী ।

তোমার জন্য কিছু প্রেমের সামগ্রী যখন যোগাড় করে আনি
ওরা কারন জিজ্ঞেস করে
পারি নাই তোমাকে ভালোবাসার দিতে ।

অপরাধী করো না আমাকে জলভরা চোখে
ফিরে যাও তুমি বসন্তের টানে
আমি একা একা থাকবো এখানে হলুদ তালপাতার ঘরে ।

কবি পরিচিতি

BanglaKobita

শাহ জামাল উদ্দিন ১৯৬২ সালের ১লা জানুয়ারী ফরিদপুর শহরে জন্মগ্রহন করেন। তার পৈত্রিক নিবাস বর্তমান গোপালগঞ্জ জেলার মুকসুদপুর উপজেলার দিগনগর গ্রামে। কিশোর বয়সে প্রাথমিক লেখাপড়া শুরু নিজ গ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। কয়েক বছর তিনি কুষ্টিয়া শহরে লেখাপড়া করেন।

১৯৭৭ সালে দিগনগর বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় হতে এস.এস.সি এবং ১৯৭৯ সালে সরকারি রাজেন্দ্র কলেজ বিজ্ঞান বিভাগ হতে এইচএসসি পাশ করেন। ১৯৮৪ সালে ফরিদপুর পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট হতে ১ম বিভাগে ডিপ্লোমা-ইন-ইঞ্জিনিয়ারিং (যন্ত্রকৌশল) পাশ করেন। প্রকৌশলী হিসেবে তিনি কতিপয় বেসরকারী প্রতিষ্ঠানে কয়েক বছর চাকুরী করার পর দুরারোগ্য ক্যান্সার ব্যাধিতে ( হজকিং লিম্ফোমা) আক্রান্ত হলে চিকিৎসারত অবস্থায় চাকুরী ছেড়ে দেন। বর্তমানে আল্লাহর অপার মহিমায় সুস্থ হয়ে ব্যবসার সাথে জড়িত আছেন। মূলত তিনি কবি। কবিতা লেখা তার পেশা নয়-নেশা। বর্তমানে তিনি নিরন্তর লিখে চলেছেন। “ স্বপ্নের সিঁড়ি আমার প্রথম ভালোবাসা ” এবং “ ছুঁয়ে দেখি ভোরের নদী ” তার প্রকাশিত গ্রন্থ। এছাড়াও কয়েকটি কবিতার বই প্রকাশের পথে। বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় লিখে চলেছেন এবং কতিপয় সাহিত্য সংস্কৃতি প্রতিষ্ঠানের সাথে জড়িত

ফেসবুক পেইজ

কবিতা আবৃত্তি