জলের মেয়ে

শাহ জামাল উদ্দিন

তোমাকে দেখি পাতাময় ডালের আড়ালে
ভোরের আলোতে
ঘুম থেকে উঠে বারান্দায় দাড়িয়ে ।

কখনো রাতের ভ্রমন পথে
হটাৎ দেখি তোমাকে কঠিন প্রতিমার মত
আছ দাঁড়িয়ে
ঝুর ঝুর ভেঙে পড় ছুঁয়ে দিলে ।

শীতল ধৈর্য নিয়ে
কখনো তোমাকে দেখি নদী জলে
খেলা কর জল নিয়ে তুমি কি জলের মেয়ে ?

আমার জানালা গুলো নীল হয়ে আছে বেদনায়
নির্লিপ্ত প্রতিক্ষায়
দেখি তুমি হেঁটে যাও কুয়াশায় ।

আমরা ঘুরেছি

শাহ জামাল উদ্দিন

একসাথে আমরা ঘুরেছি হেমন্তের মাঠে বসন্তের বাগানে
শরতের কাশবনে
অল্প অল্প বৃষ্টিতে রাস্তার মোড়ে মোড়ে
কতদিন দাড়িয়ে ছিলাম তোমাকে নিয়ে ।

লাল মসজিদের পাশে কাবাব ঘরের সামনে
ইচ্ছে করে একরাশ চুল উড়িয়ে
দাঁড়িয়ে থাকতে চন্দ্রমল্লিকা হাতে
সেখানে দেখা হতো তোমার আমার সাথে ।

শুনেছি তোমার লাবন্য বিক্রিকরে তুমি চলে গেছ
দীর্ঘ পরবাসে
ব্যথিত গ্রামের ছেলেবেলার সেই পুকুরপাড়ে
এখনো অপেক্ষায় থাকি দাড়িয়ে - অনিচ্ছায়
তুমি নাই সেখানে
তুবুও তোমার গন্ধ পাই জোছনায়
তোমাদের উঠোনে গেলে ।

দেখা হয়

শাহ জামাল উদ্দিন

অন্ধকারে আলোতে ইচ্ছা করে
বসে থাকি কিছুক্ষন তোমার পাশে ।

যখন ঝড় আসে
যখন ঝরা পাতা ওড়ে বৃষ্টি পড়ে
ইচ্ছা করে ঘুরে আসি ঘাসের আনন্দে একসঙ্গে
তোমাকে ছুঁয়ে ।

দেখি একটা প্রেম থেকে
কতটা কবিতা লেখা যায়
ততদিন আমি থাকবো এখানে নির্বাসনে - ইচ্ছে করে ।

হটাৎ হটাৎ খুঁজে পাই তোমাকে নিবিড় অন্ধকারে
আধার গ্রাস করা চোখে ।

দেখি তুমি মিশে যাও শুন্যতায় -
তোমাকে লিখে রাখি কবিতায় ।

তোমার জন্য

শাহ জামাল উদ্দিন

তোমার জন্য আমি সকাল দেখি
ঘুরে বেড়াই রাত্রির অনুপম অলিগলি
ভোর হতে আর কত দেরি
আকাশ দেখে আমি বলে দিতে পারি ।

দু'প্রহর অপরাহ্নের সীমা রেখায়
বেদনার কত দীর্ঘ ছায়া
দেখি সবুজ পাতায় ।

তোমার জন্য দেখি রোদ বৃষ্টি
দেখি দিনের সাথে সন্ধ্যার মিতালী
গ্রীষ্ম বর্ষা শরৎ হেমন্ত
শীত বসন্তের পরিক্রমায় পরিভ্রমণ করি ।

ফুল ফোটা দেখে বলে দিতে পারি
বর্ষা হতে আর কত দেরি
তোমার জন্য দেখি রোদ বৃষ্টি।

কবি পরিচিতি

BanglaKobita

শাহ জামাল উদ্দিন ১৯৬২ সালের ১লা জানুয়ারী ফরিদপুর শহরে জন্মগ্রহন করেন। তার পৈত্রিক নিবাস বর্তমান গোপালগঞ্জ জেলার মুকসুদপুর উপজেলার দিগনগর গ্রামে। কিশোর বয়সে প্রাথমিক লেখাপড়া শুরু নিজ গ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। কয়েক বছর তিনি কুষ্টিয়া শহরে লেখাপড়া করেন।

১৯৭৭ সালে দিগনগর বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় হতে এস.এস.সি এবং ১৯৭৯ সালে সরকারি রাজেন্দ্র কলেজ বিজ্ঞান বিভাগ হতে এইচএসসি পাশ করেন। ১৯৮৪ সালে ফরিদপুর পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট হতে ১ম বিভাগে ডিপ্লোমা-ইন-ইঞ্জিনিয়ারিং (যন্ত্রকৌশল) পাশ করেন। প্রকৌশলী হিসেবে তিনি কতিপয় বেসরকারী প্রতিষ্ঠানে কয়েক বছর চাকুরী করার পর দুরারোগ্য ক্যান্সার ব্যাধিতে ( হজকিং লিম্ফোমা) আক্রান্ত হলে চিকিৎসারত অবস্থায় চাকুরী ছেড়ে দেন। বর্তমানে আল্লাহর অপার মহিমায় সুস্থ হয়ে ব্যবসার সাথে জড়িত আছেন। মূলত তিনি কবি। কবিতা লেখা তার পেশা নয়-নেশা। বর্তমানে তিনি নিরন্তর লিখে চলেছেন। “ স্বপ্নের সিঁড়ি আমার প্রথম ভালোবাসা ” এবং “ ছুঁয়ে দেখি ভোরের নদী ” তার প্রকাশিত গ্রন্থ। এছাড়াও কয়েকটি কবিতার বই প্রকাশের পথে। বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় লিখে চলেছেন এবং কতিপয় সাহিত্য সংস্কৃতি প্রতিষ্ঠানের সাথে জড়িত

ফেসবুক পেইজ

কবিতা আবৃত্তি