দিনভর আমি দেখি তোমাকে

শাহ জামাল উদ্দিন

তোমাকে আমি দেখি চর্তুরদিকে
গোলাপ ফুলে ফুঁসে ওঠা
সমুদ্রের ঢেউয়ে বেদনার গভীর ক্ষতে
উপহারে গানে ফুলদানীতে
সূর্য ওঠা ভোরে পখির সুরেলা শিষে নিয়মে অনিয়মে

ভালোবাসার স্বাদ মুখ ভরে নিয়ে
দিনভর আমি দেখি তোমাকে
পরিযায়ী পাখিদের ভীড়ে তারাময় নীল রাতে
ঘরের প্রতিটি সমগ্রীর ভেতরে
উঠনে বিছানার চাদরে
জায়নামাজে গরম চায়ের কাপে রুটিতে খাবার টেবিলে
দিনভর আমি দেখি তোমাকে

নীবিড় হারিয়ে যেতে যেতে
প্রজাপতির মত তোমাকে উড়তে দেখি
অনুভবে দেখি
বৃষ্টির ফোঁটায় হাত পেতে দেখি
মৃত্তিকায় গাছের সৌন্দর্য্যে দুই পাঁজরের মাঝ খানে
শীতের বারান্দায়
খোলা জানালায় দিনভর আমি দেখি তোমাকে

আমার গোপন ব্যথায় পরাজয়ে সৌভাগ্যে
হাসি উল্লাসে ব্যথা বেদনায়
আমার সামনে পেছনে ভূলভ্রান্তিতে
অতিতে ভবিষ্যতে গোপনে প্রকাশ্যে
দিনভর আমি দেখি তোমাকে ।

ছবি

শাহ জামাল উদ্দিন

অনেক বছর পরে
একদিন হটাৎ যদি দেখি তোমাকে
সেই মাটির কাছে ফুরফুরে বাতাসে
আঁকবো তোমাকে ইচ্ছের রঙতুলিতে
তুমি ছিলে সেই
চপল ডানার দীগন্ত নীল পাখি
সাথে করে বয়ে বেড়াবো
তোমার সুষমা আমি ।

অথবা অতীতের অথৈই সীমানায়
ইতিহাসের ছেড়া পাতায়
ভীষন কুয়াশায় তোমার কোন একদিনের
পুরনো ছবি পাই যদি
যত্ন করে রেখে দিবো আত্মার কাছাকাছি ।

অথবা পথ চলতে চলতে
ক্লান্ত মানুষটির বিষন্ন ভরা মুখ দেখে
তোমাকে চিনে ফেলি যদি
আমার দু'চোখের মধ্যে রেখে দিবো
পঞ্চাশ বছর আগেকার
সেই কিশোরী তুমি ।

চারিদিকে দিকে মরুভূমি
সেখানে আমার নিমগ্ন চোখ দেখে
চিনেফেল যদি
এক অখন্ড রেখায় এঁকে নিয়ো
আমার বর্তমানের বিবর্ন ছঁবি ।

আবার যদি দেখা হয়
রাতের কোন নিবিড় আয়োজনে
রুগ্ন গোলাপের মত তোমাকে পরিচর্যা করবো
তবুও এত বছর পরে ।

অনেক বছর পরে
একদিন হটাৎ যদি দেখি তোমাকে
সেই মাটির কাছে ফুরফুরে বাতাসে
আঁকবো তোমাকে ইচ্ছের রঙতুলিতে
তুমি ছিলে সেই
চপল ডানার দীগন্ত নীল পাখি
সাথে করে বয়ে বেড়াবো
তোমার সুষমা আমি ।

হলদেপাখি ভালোবাসি

শাহ জামাল উদ্দিন

বুকের কাছে মনের পাশে
হলদেপাখি আমার আছে ভালোবাসি
শুধুই তাকে
ময়না টিয়া আশেপাশে সামনে দেখি
ময়ূর নাচে
তবু আমার হলদেপাখি মন যে টানে ।

যখন আমি কষ্টে থাকি
কষ্টগুলো ভাগ করে নেয় আধাআধি
আমার বুকে মাথা রাখে দুঃখ পেলে
নৃত্য পাগল পা দুটো তার চলতে থাকে
উথাল পাথাল ঝড় এলে
সবকিছু তার সামলে নিতে ।

রাত্রি যখন ঘিরে রাখে অন্ধকারে এই আমাকে
জলভরা তার দু' চোখ দেখে
জোছনা এসে আদর করে ।

বুক ভরে দেয় ভালোবাসার উপহারে
এমনি করে
হলদেপাখি উড়ে আসে বারে বারে ।

যাবো তোমার কাছে

শাহ জামাল উদ্দিন

তুমি ডাকলেই আমি জেগে উঠি
তুমি ভাবলেই আমি তোমাকে দেখি
খোঁপা খুললে জলপাইয়ের এর ঘ্রান
খুঁজে পাই আমি এখানে
কথা বললেই আমি আর একটি কবিতা লিখি ।

অন্ধকার আর একটু নির্জন হলে
আমি নিঃশব্দে হেটে যাবো তোমার কাছে
তোমার গান গাওয়া শুনতে ।

আমি ক্লান্ত মানুষ তবু তোমার
প্রেমের শুদ্ধ হাততালি শুনেছি গভীর রাতে
বাতাসে কান পেতে
কবিতার কাছে শুনেছি অভিজ্ঞ সুন্দরী
প্রেমের কুসুম কাঁপাও এখনো তুমি ।

সহজেই চলে আস আমার কবিতার কাছে
সহজেই চলে আস আমার কাছে
দৃপ্ত দুপুরে প্রেম আর বুদ্ধির জমজ ডানা মেলে
আমার বুকের কাছে যে তিক্ততার ছাঁপ আছে
সেই সব মুছে দিতে ।

অন্ধকার আর একটু নির্জন হলে
আমি নিঃশব্দে হেটে যাবো তোমার কাছে
তোমার গান গাওয়া শুনতে ।

কবি পরিচিতি

BanglaKobita

শাহ জামাল উদ্দিন ১৯৬২ সালের ১লা জানুয়ারী ফরিদপুর শহরে জন্মগ্রহন করেন। তার পৈত্রিক নিবাস বর্তমান গোপালগঞ্জ জেলার মুকসুদপুর উপজেলার দিগনগর গ্রামে। কিশোর বয়সে প্রাথমিক লেখাপড়া শুরু নিজ গ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। কয়েক বছর তিনি কুষ্টিয়া শহরে লেখাপড়া করেন।

১৯৭৭ সালে দিগনগর বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় হতে এস.এস.সি এবং ১৯৭৯ সালে সরকারি রাজেন্দ্র কলেজ বিজ্ঞান বিভাগ হতে এইচএসসি পাশ করেন। ১৯৮৪ সালে ফরিদপুর পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট হতে ১ম বিভাগে ডিপ্লোমা-ইন-ইঞ্জিনিয়ারিং (যন্ত্রকৌশল) পাশ করেন। প্রকৌশলী হিসেবে তিনি কতিপয় বেসরকারী প্রতিষ্ঠানে কয়েক বছর চাকুরী করার পর দুরারোগ্য ক্যান্সার ব্যাধিতে ( হজকিং লিম্ফোমা) আক্রান্ত হলে চিকিৎসারত অবস্থায় চাকুরী ছেড়ে দেন। বর্তমানে আল্লাহর অপার মহিমায় সুস্থ হয়ে ব্যবসার সাথে জড়িত আছেন। মূলত তিনি কবি। কবিতা লেখা তার পেশা নয়-নেশা। বর্তমানে তিনি নিরন্তর লিখে চলেছেন। “ স্বপ্নের সিঁড়ি আমার প্রথম ভালোবাসা ” এবং “ ছুঁয়ে দেখি ভোরের নদী ” তার প্রকাশিত গ্রন্থ। এছাড়াও কয়েকটি কবিতার বই প্রকাশের পথে। বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় লিখে চলেছেন এবং কতিপয় সাহিত্য সংস্কৃতি প্রতিষ্ঠানের সাথে জড়িত

ফেসবুক পেইজ

কবিতা আবৃত্তি