ভালো থাকো

শাহ জামাল উদ্দিন

তুমি ভালো থাকো প্রতিদিন
বৃষ্টি হওনা কত দিন !

নির্মেঘ রাত্রি লেবুর পাতা সকালের সূর্য
তুমি কি এসব ভুলে গেছ ?

আমি চাই তুমি সেদিনের সেই মেয়েটির মত
আবার মেয়ে হয়ে ওঠো
তোমার কাজল চোখ-
আবার রাজহাঁস দেখুক শালুকের ফুল
ঝিনুক খুঁজতে থাকুক
বৃষ্টির শব্দের মত তোমার পায়ের ঘুঙুর
বাজতে থাকুক
বাগানের কামরাঙা গাছটির মত
হয়ে ওঠো তুমি সুরেলা সবুজ ।

তোমার উষ্ণ বকুল তলায় সারাদিন
ছায়া কুড়াবো
আর আমার শিরাউপশিরায় জমে থাকা অন্ধকারে
ভালোবাসার আলো ছড়াবো ।

তুমি ভালো থাকো প্রতিদিন
বৃষ্টি হওনা কত দিন !

নির্মেঘ রাত্রি লেবুর পাতা সকালের সূর্য
তুমি কি এসব ভুলে গেছ ?

একজন

শাহ জামাল উদ্দিন

আমার নিরিবিলি চোখ সারাদিন শুধু
একজনকেই খোঁজে
জীবনের পুঞ্জিভুত দুর্দশা সরিয়ে
পৃথিবীর দূর কিনারা থেকে
দুইহাতে তুলে আনি তাকে ।

আর তার প্রেম কঁচি পাতার সৌরভে
আমার শরির ভরে দেয়
চোখ বুজে আসে নিবিড় নিদ্রায়
আমাকে পহারা দেয় আপরূপ সুরের মূর্ছনায়
আমার চারপাশে
মুঠিমুঠি নিরবতা এনে দেয় সে আমায়
তার নাম ভেসে বেড়ায় আমার
কবিতার বর্ণমালায় ।

আমার নিরিবিলি চোখ সারাদিন শুধু
একজনকেই খোঁজে
জীবনের পুঞ্জিভুত দুর্দশা সরিয়ে
পৃথিবীর দূর কিনারা থেকে
দুইহাতে তুলে আনি তাকে ।

মনে করো আমি নেই

শাহ জামাল উদ্দিন

মনে কর আমি নেই তুমি আছ-
তখন তুমি নারিকেল গাছের পাতার ফাঁক দিয়ে
জোছনা দেখছো একাকী
গভীর রাতে দোল চেয়ারটায় বসে বসে

আমি তখন কৃষ্ণচূড়ার গাছটির আড়ালে দাঁড়িয়ে
অন্ধকারে দেখছি তোমাকে
খেলাচ্ছলে সেই আগেকার মতো
ভাবছো কী যেন মনে মনে ।

মাঝে মাঝে সূর্য তার সমস্ত ভার নিয়ে হেলে পড়বে
তোমার শরিরে আমি নেই বলে
আমি তখন শালিকের মত নিঃশব্দে তোমার দিনের
সমস্ত ব্যস্ততা দেখবো
এবাড়ির উঠোনের ডালিম গাছটির নীচে দড়িয়ে
ঠান্ডা রাতে অথবা কখনো মধ্যদুপুরে
স্বপ্ন ভাঙা যুবকের নিস্কাম বিস্ময়ে ।

মনে কর আমি নেই তুমি আছ-
মধ্যরাতে ঘুম ভেঙে গেলে উচ্ছল আহ্লাদে তুমি
আমার পায়ের শব্দ খুঁজবে এঘরে ওঘরে
আমি তখন অদৃশ্য খাতা খুলে
তোমার নাম লিখছি বারে বারে ।

তারপর তুমিও একদিন চলে আসবে
আমার কাছে
তোমার সমস্ত ঐশ্বর্য্য আর অলঙ্কার নিয়ে
চন্দ্রমল্লিকার কাছে ঠিকানা রেখে ।

মেঘ জমে

শাহ জামাল উদ্দিন

একটাও রাত বাঁধ দিয়ে রাখতে পারি নাই
সুখ গুলো খেলতে খেলতে
কোথায় যে গেছে চলে বুনোহাঁস হয়ে ।

সেই কবে থেকে দুঃখগুলো
তাকিয়ে আছে নষ্ট জানালা দিয়ে বোবা হয়ে ।

শুধু কষ্ট পেলে কান্নার বরফ গলে -
ফোঁটা ফোঁটা জল পড়ে মাটিতে ।

তোমাকে ভালোবাসার কারন খুঁজতে গেলে
আকাশে কালো মেঘ জমে
জীবনের সব দিনগুলো বিফলে গেলো অবশেষে ।

আমার শোবার আঙিনায় তোমার সুগন্ধ নাই
একটাও রাত
বাঁধ দিয়ে রাখতে পারি নাই
সুখ গুলো খেলতে খেলতে কোথায় যে গেছে চলে
বুনোহাঁস হয়ে ।

কবি পরিচিতি

BanglaKobita

শাহ জামাল উদ্দিন ১৯৬২ সালের ১লা জানুয়ারী ফরিদপুর শহরে জন্মগ্রহন করেন। তার পৈত্রিক নিবাস বর্তমান গোপালগঞ্জ জেলার মুকসুদপুর উপজেলার দিগনগর গ্রামে। কিশোর বয়সে প্রাথমিক লেখাপড়া শুরু নিজ গ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। কয়েক বছর তিনি কুষ্টিয়া শহরে লেখাপড়া করেন।

১৯৭৭ সালে দিগনগর বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় হতে এস.এস.সি এবং ১৯৭৯ সালে সরকারি রাজেন্দ্র কলেজ বিজ্ঞান বিভাগ হতে এইচএসসি পাশ করেন। ১৯৮৪ সালে ফরিদপুর পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট হতে ১ম বিভাগে ডিপ্লোমা-ইন-ইঞ্জিনিয়ারিং (যন্ত্রকৌশল) পাশ করেন। প্রকৌশলী হিসেবে তিনি কতিপয় বেসরকারী প্রতিষ্ঠানে কয়েক বছর চাকুরী করার পর দুরারোগ্য ক্যান্সার ব্যাধিতে ( হজকিং লিম্ফোমা) আক্রান্ত হলে চিকিৎসারত অবস্থায় চাকুরী ছেড়ে দেন। বর্তমানে আল্লাহর অপার মহিমায় সুস্থ হয়ে ব্যবসার সাথে জড়িত আছেন। মূলত তিনি কবি। কবিতা লেখা তার পেশা নয়-নেশা। বর্তমানে তিনি নিরন্তর লিখে চলেছেন। “ স্বপ্নের সিঁড়ি আমার প্রথম ভালোবাসা ” এবং “ ছুঁয়ে দেখি ভোরের নদী ” তার প্রকাশিত গ্রন্থ। এছাড়াও কয়েকটি কবিতার বই প্রকাশের পথে। বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় লিখে চলেছেন এবং কতিপয় সাহিত্য সংস্কৃতি প্রতিষ্ঠানের সাথে জড়িত

ফেসবুক পেইজ

কবিতা আবৃত্তি