নতুন আর পুরনো

শাহ জামাল উদ্দিন

পুরনো হয়ে গেছি দিনে দিনে আমি
অথচ তোমাকে নতুন নতুন দেখি
আর ভালোবাসায় গ্রহন করি প্রতিদিনই ।

একদিন তুমি থাকবে নিবিড় জোছনায়
জোনাকি থাকবে তোমার নির্জন হাতের মুঠোয়
আমার মনের অন্তরালে
ঝড় বয়ে যাবে যখন আমি দেখবো তোমাকে
রাতের ফাঁকে ফাঁকে
আমি থাকবো প্রশ্নাতীত অন্ধকারে ।

আমাকে যখন তোমার পড়বে মনে
বকুল ফুলের ঘ্রান পাবে
আর নিউমার্কেট শাহবাগের মোড়
অথবা আজিমপুরের রাস্তা দিয়ে
হেঁটে বেড়ানো আত্মস্মৃতি
ভেসে উঠবে তোমার মনের কিনারে ।

পুরনো হয়ে গেছি দিনে দিনে আমি
অথচ তোমাকে নতুন নতুন দেখি
আর ভালোবাসায় গ্রহন করি প্রতিদিনই ।

যদি তুমি সমুদ্র হও

শাহ জামাল উদ্দিন

যদি তুমি সমুদ্র হও
আমি রাত হয়ে আসবো কাছে
তোমার ঢেউয়ে নাবিকের মত
ভাসতে দিও আমাকে ।

তোমার প্রত্যান্ত বাঁকের উদ্দাম ভঙ্গিমা দেখে
ফোঁটা ফোঁটা জল ছড়াবো
আনন্দে চারিদিকে ।

আমাদের প্রেম ফিরে আসবে
রাতের দরজা খুলে উপকূলে
নিশ্চিন্তে আগুন জ্বালাবো আমরা দুজনে ।

তারপর আমি ফিরে যাবো আমার আকাশে
তুমি তোমার সমুদ্রে-
বিদায়ের চিহ্ন রেখে ।।

ডেকোনা আমাকে

শাহ জামাল উদ্দিন

আমি ভুলে গিয়ছি তোমাকে
অজস্র সময় ব্যয় করে
কেন তবে ডাকলে আমাকে হটাৎ
দুপুরের এই রোদে
দুরে দুরে ছিলে কখনো স্পর্শ করি নাই তোমাকে ।

গোপনে অন্তরালে ঝড় বয়ে যায়
অস্থিরতায় আর ভেতরে ভয়
আবার যদি হারাতে হয়
আমার জীবন থেকে তুমি এক বসন্তে
হলুদ পাতার মত ঝরে গেছ একদিন
এখন তোমার ছায়া কুড়াই প্রতিদিন।

তোমার সেই মৃদু চঞ্চল পদচারণা
তোমার সিঁড়িবাওয়া
আমার মনের মধ্যে চকিত আনাগোনা
ভুলে থাকি আমি ।

তুমি আর ডাক দিও না আমাকে
বিষাদ ছলকে ওঠে বিষন্নতা ভরা বুকে
আমিও খুঁজতে চাইনা তোমাকে
রাতের পাতা সরিয়ে ।

তুমি না ফিরলে

শাহ জামাল উদ্দিন

তুমি না ফিরলে আমার ফেরা হয় না ঘরে
যদিও আমি থাকি বহুদুরে
তবু সেই বহুতল ভবনের পাঁচতলা
আমার বুকের ভেতরে -
যেন দুজনায় বসবাস করি এক কক্ষে ।

আমি দেখি তুমি যখন উঠে আস সিঁড়ি বেয়ে
বাজারের ব্যাগ দুটো হতে নিয়ে
তোমার ক্লান্ত হাত আমায় স্পর্শ করে ।

এইসব গাছ এই নদী এই আকাশ
ফিস্ ফিস্ করে
আমাকে তোমারই কথা বলে
তারপর আমি হেঁটে যাই ভৈরব নদীর তীর ঘেঁসে
তোমার নারীত্বের মোহনার খোঁজে
আমি থাকি বহু দূরে ।

তুমি না ফিরলে আমার ফেরা হয় না ঘরে
যদিও আমি থাকি বহুদুরে ।

কবি পরিচিতি

BanglaKobita

শাহ জামাল উদ্দিন ১৯৬২ সালের ১লা জানুয়ারী ফরিদপুর শহরে জন্মগ্রহন করেন। তার পৈত্রিক নিবাস বর্তমান গোপালগঞ্জ জেলার মুকসুদপুর উপজেলার দিগনগর গ্রামে। কিশোর বয়সে প্রাথমিক লেখাপড়া শুরু নিজ গ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। কয়েক বছর তিনি কুষ্টিয়া শহরে লেখাপড়া করেন।

১৯৭৭ সালে দিগনগর বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় হতে এস.এস.সি এবং ১৯৭৯ সালে সরকারি রাজেন্দ্র কলেজ বিজ্ঞান বিভাগ হতে এইচএসসি পাশ করেন। ১৯৮৪ সালে ফরিদপুর পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট হতে ১ম বিভাগে ডিপ্লোমা-ইন-ইঞ্জিনিয়ারিং (যন্ত্রকৌশল) পাশ করেন। প্রকৌশলী হিসেবে তিনি কতিপয় বেসরকারী প্রতিষ্ঠানে কয়েক বছর চাকুরী করার পর দুরারোগ্য ক্যান্সার ব্যাধিতে ( হজকিং লিম্ফোমা) আক্রান্ত হলে চিকিৎসারত অবস্থায় চাকুরী ছেড়ে দেন। বর্তমানে আল্লাহর অপার মহিমায় সুস্থ হয়ে ব্যবসার সাথে জড়িত আছেন। মূলত তিনি কবি। কবিতা লেখা তার পেশা নয়-নেশা। বর্তমানে তিনি নিরন্তর লিখে চলেছেন। “ স্বপ্নের সিঁড়ি আমার প্রথম ভালোবাসা ” এবং “ ছুঁয়ে দেখি ভোরের নদী ” তার প্রকাশিত গ্রন্থ। এছাড়াও কয়েকটি কবিতার বই প্রকাশের পথে। বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় লিখে চলেছেন এবং কতিপয় সাহিত্য সংস্কৃতি প্রতিষ্ঠানের সাথে জড়িত

ফেসবুক পেইজ

কবিতা আবৃত্তি