কবিতা লিখি

শাহ জামাল উদ্দিন

তুমি ভাবলেই আমি জেগে উঠি
খোঁপা খুললেই
দূর থেকে জলপাইয়ের এর ঘ্রান পাই আমি
তোমার লাজুক কথা শুনে কবিতা লিখি।

অন্ধকার আর একটু নির্জন হলে
আমি নিঃশব্দে হেটে যাবো
তোমার কাছে গান শুনতে ।

তোমার প্রেমের শুদ্ধ হাততালি শুনি মধ্যরাতে
বাতাসে কান পেতে
ক্লান্তি দূর হয়ে যায় আমার জীবন থেকে ।

প্রেমের কুসুম কাঁপাও এখনো তুমি অভিজ্ঞ সুন্দরী
সহজেই চলে আস কবিতার কাছে
সহজে চলে আস দৃপ্ত দুপুরে
প্রেম আর বুদ্ধির জমজ ডানা মেলে
আমার বুকের গভীরে
তিক্ততার ছাঁপগুলো মুছে দিতে ।

অন্ধকার আর একটু নির্জন হলে
আমি নিঃশব্দে হেটে যাবো
তোমার কাছে গান শুনতে ।

গীতিকবিতা

শাহ জামাল উদ্দিন

আমি যদি না আসি তোমার কাছে
মানুষের ভিড় ঠেলে
তুমি এসো এক খন্ড মেঘে ভেসে
বেলে হাঁস হয়ে
আমি ঝাপ দিব বাতাসে
তোমাকে সাথে নিয়ে ।

কখনো জলের ভেতর যদি
শাপলা অথবা রাজহাঁস হও তুমি
আমি ঝিলমিলে বুদবুদ হয়ে
যাবো তোমার কাছে
কতটা দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে ।

বন্ধু তুমি-
ভালোবাসার গীতিকবিতা তুমি
তোমার দারুণ কথাগুলো শুনবো আমি ।

প্রথম ভায়োলিন

শাহ জামাল উদ্দিন

আজ তুমি আমাকে কিছুটা বদলে দাও
আমার যা কিছু ভুল ছিল
সবগুলো ভুল শুধরে দাও।

আবার আমি বর্ণমালার নদীতে
নামতার নৌকায় চড়ে
শৈশব পার করবো তোমাকে নিয়ে ।

কৈশরে যাবে তুমি আমাকে নিয়ে
কাশফুলের সাথে পরিচয় করবে নতুন করে
কচুরীপানার ফুলগুলো তুলবো
আমরা দুজনে একসাথে ।

যৌবনের জরুরী চিঠিগুলো
পড়ে পড়ে শুনাবে আমাকে
যে গুলো পুরনো বাক্সের ভিতরে
আজও অখোলা রয়ে গেছে ।

ছিলাম আমি এতদিন অভিভাবকহীন
গোলাপের রঙ
ভালোভাবে দেখায়নি আমাকে
কেউ কোনদিন
ঘাসফুলের কাছে যেতে যেতে
কেটে গেলো বহুদিন
তুমিই এখন আমার বুকের প্রথম ভায়োলিন ।

ভালোবাসার ঘর

শাহ জামাল উদ্দিন

আমার বুকের ভিটের উপর শূন্য যে ঘর
সে ঘর ছিল ভালোবাসার
কেউ আসেনা কপাট খুলে
এখন যে আর আপন কি পর ।

চৌকাঠে তার কারুকাজের কত বাহার
প্রেমের খুটি ছিল যে তার
তার ভেতরে এখন বাসা উঁইপোকার
নাড়া দিলে পড়ে যাবে ঘরটি আমার ।

শিশির ফোটার অলংকারে সবুজ পাতার ঝংকারে
আসতো ফড়িং প্রজাপতি সন্ধ্যা ভোরে
ফিরে ফিরে আমার ঘরে ।

এখন আমার পায়ের নীচে শব্দ বাজে শুকনো পাতার
চারিদিকে বাসা দেখি উইপোকার
ভেঙে গেছে আমার সে ঘর ভালোবাসার
কেউ আসেনা কপাট খুলে
এখন যে আর আপন কি পর ।

কবি পরিচিতি

BanglaKobita

শাহ জামাল উদ্দিন ১৯৬২ সালের ১লা জানুয়ারী ফরিদপুর শহরে জন্মগ্রহন করেন। তার পৈত্রিক নিবাস বর্তমান গোপালগঞ্জ জেলার মুকসুদপুর উপজেলার দিগনগর গ্রামে। কিশোর বয়সে প্রাথমিক লেখাপড়া শুরু নিজ গ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। কয়েক বছর তিনি কুষ্টিয়া শহরে লেখাপড়া করেন।

১৯৭৭ সালে দিগনগর বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় হতে এস.এস.সি এবং ১৯৭৯ সালে সরকারি রাজেন্দ্র কলেজ বিজ্ঞান বিভাগ হতে এইচএসসি পাশ করেন। ১৯৮৪ সালে ফরিদপুর পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট হতে ১ম বিভাগে ডিপ্লোমা-ইন-ইঞ্জিনিয়ারিং (যন্ত্রকৌশল) পাশ করেন। প্রকৌশলী হিসেবে তিনি কতিপয় বেসরকারী প্রতিষ্ঠানে কয়েক বছর চাকুরী করার পর দুরারোগ্য ক্যান্সার ব্যাধিতে ( হজকিং লিম্ফোমা) আক্রান্ত হলে চিকিৎসারত অবস্থায় চাকুরী ছেড়ে দেন। বর্তমানে আল্লাহর অপার মহিমায় সুস্থ হয়ে ব্যবসার সাথে জড়িত আছেন। মূলত তিনি কবি। কবিতা লেখা তার পেশা নয়-নেশা। বর্তমানে তিনি নিরন্তর লিখে চলেছেন। “ স্বপ্নের সিঁড়ি আমার প্রথম ভালোবাসা ” এবং “ ছুঁয়ে দেখি ভোরের নদী ” তার প্রকাশিত গ্রন্থ। এছাড়াও কয়েকটি কবিতার বই প্রকাশের পথে। বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় লিখে চলেছেন এবং কতিপয় সাহিত্য সংস্কৃতি প্রতিষ্ঠানের সাথে জড়িত

ফেসবুক পেইজ

কবিতা আবৃত্তি