নয়ন তারা (আর্জিসকে)

শাহ জামাল উদ্দিন

এই দেখনা পাখির ছানা
চোখ খোলেনা
দূরের আকাশ কাছে এসে আদর করে
ছোট্ট পাখি আজ এসেছে আমার ঘরে ।

চড়ুইপাখি আসে ঘরে
ময়না টিয়া খাঁচার ভেতর নড়েচড়ে
তবু আমার এই পাখিটি মন' কাড়ে ।

মনে মনে দাদা বলে ডাক দিয়ে সে মিষ্টি হাসে
চোখের ভেতর চোখ রেখে সে চেয়ে থাকে
এ যেন সে খুঁজছি যাকে ।

বুকের কাছে নিয়ে দেখি
এ যে আমার সাতাশ বছর আগের পাখি
তার দিকে তাই চেয়ে থাকি ।

যুগে যুগে এমনি করে
অনেক পাখি আসবে যাবে আমার ঘরে
ইতিহাসের পাতা খুলে
নামটি আমার নিবে তুলে ।

এই ঘরেতে ছোট্ট পাখি আসবে যারা
তারাই আমার নয়ন তারা ।

আর কটা দিন

শাহ জামাল উদ্দিন

আর কটা দিন না হয় তুমি এমনি থাক
বদলে যাওয়ার ইচ্ছাটাকে শান্ত রাখ ।

ইচ্ছেগুলি ছুটাছুটি করছে কেন
থামতে বলো
বুঝতে পারি তাদের তুমি কান্না শোন
নির্জনে তাই ডেকে নিয়ে ভুল করেছ শুধুই বলো
বলতে পারো সময় হলে সবকিছুই
এসে যাবে শীতের মত ।

কেন তুমি শিকার খোঁজ মনের ভিতর বিড়াল আঁক
আর কটা দিন না হয় তুমি ইচ্ছে গুলি
আগের মতই বুকের ভিতর লুকিয়ে রাখ ।

নতুন জামা নতুন শাড়ি নতুন গাড়ি গয়নাগাটি
কেনাকাটার ইচ্ছেগুলি
আর কটা দিন না হয় তুমি
নতুন প্রেমের সোনার সুতায় বেঁধে রাখ ।

আর কটা দিন না হয় তুমি এমনি থাক
বদলে যাওয়ার ইচ্ছাটাকে শান্ত রাখ ।

দুই ভাই

শাহ জামাল উদ্দিন

ফয়সাল যখন মায়ের পিছে
ফারুক তখন ফড়িং হয়ে যায় যে উড়ে বাবার কাছে ।

ফারুক যখন মান করার ভান করে
মায়ের আদর উপচে পড়ে
বাবা তখন ডেকে বলে কেন তোমরা দুষ্ট হলে ।

একটু পরে ফয়সাল এসে ভাইয়া বলে আদর করে
ঝগড়া তাদের মিটে গেলে
কেউ বলে না দুষ্ট ছেলে ।

ছোট্ট মেয়ে (মাহিকে-)

শাহ জামাল উদ্দিন

নুপুর পায়ে ঝুমুর ঝুমুর শব্দ করে
টিপ আছে তার কপাল জুড়ে কাজল কালো চোখে
চাঁদ হাসে তার সোনার মত মুখটি দেখে
সে যে আমার ছোট্ট মেয়ে ।

থাকে আমার হৃদয় জুড়ে, মায়ের মত আদর করে
পাখির মত উড়ে উড়ে ঘুরে ঘুরে
ঘর কন্যার কাজ করে ।

মজার মজার রান্না করে , গাছের পাতায় মাছ বানিয়ে
বাতাসে সে মিছে মিছি আগুন জ্বালে
হলুদ মরিচ দিতে হবে তাও সে জানে ।

কলাপাতার ঘর বানিয়ে গরম গরম খাবার আনে
সে যে আমার ছোট্ট মেয়ে
দুঃখের মাঝে খুশির জোয়ার ডেকে আনে - ছোট্ট মেয়ে।

কবি পরিচিতি

BanglaKobita

শাহ জামাল উদ্দিন ১৯৬২ সালের ১লা জানুয়ারী ফরিদপুর শহরে জন্মগ্রহন করেন। তার পৈত্রিক নিবাস বর্তমান গোপালগঞ্জ জেলার মুকসুদপুর উপজেলার দিগনগর গ্রামে। কিশোর বয়সে প্রাথমিক লেখাপড়া শুরু নিজ গ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। কয়েক বছর তিনি কুষ্টিয়া শহরে লেখাপড়া করেন।

১৯৭৭ সালে দিগনগর বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় হতে এস.এস.সি এবং ১৯৭৯ সালে সরকারি রাজেন্দ্র কলেজ বিজ্ঞান বিভাগ হতে এইচএসসি পাশ করেন। ১৯৮৪ সালে ফরিদপুর পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট হতে ১ম বিভাগে ডিপ্লোমা-ইন-ইঞ্জিনিয়ারিং (যন্ত্রকৌশল) পাশ করেন। প্রকৌশলী হিসেবে তিনি কতিপয় বেসরকারী প্রতিষ্ঠানে কয়েক বছর চাকুরী করার পর দুরারোগ্য ক্যান্সার ব্যাধিতে ( হজকিং লিম্ফোমা) আক্রান্ত হলে চিকিৎসারত অবস্থায় চাকুরী ছেড়ে দেন। বর্তমানে আল্লাহর অপার মহিমায় সুস্থ হয়ে ব্যবসার সাথে জড়িত আছেন। মূলত তিনি কবি। কবিতা লেখা তার পেশা নয়-নেশা। বর্তমানে তিনি নিরন্তর লিখে চলেছেন। “ স্বপ্নের সিঁড়ি আমার প্রথম ভালোবাসা ” এবং “ ছুঁয়ে দেখি ভোরের নদী ” তার প্রকাশিত গ্রন্থ। এছাড়াও কয়েকটি কবিতার বই প্রকাশের পথে। বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় লিখে চলেছেন এবং কতিপয় সাহিত্য সংস্কৃতি প্রতিষ্ঠানের সাথে জড়িত

ফেসবুক পেইজ

কবিতা আবৃত্তি