সবুজ রঙের মেয়ে (আয়শাকে)

শাহ জামাল উদ্দিন

তোমরা যারা একে একে গেছ চলে
আমার জীবন থেকে সবুজ মেয়ে অংক করে
আমি ভুলে গেছি জোর করে তোমাদেরকে
ভেবেছিলাম জীবনের সকল বসন্তে অদল-বদল করে নিবো ভালোবাসা তোমাদের সাথে।

অথচ তোমরা ভেবেছিলে আমি ডুবে যাবো অন্ধকারে
আমার নাম মুছে যাবে ধুলোবালিতে
এখন আমি দেখি
তোমাদের বিবর্ন মুখখানি স্বপ্নের ভিতরে
ফিরে ফিরে তাকাও আমার দিকে সেদিনের পর থেকে ।

আমি আবার সদ্যজাত হয়েছি যার স্পর্শে
তার জন্ম হয়েছিল ৩রা এপ্রিলে
আমার নরকীয় জীবনে এসেছিল
হালকা বাদামি শরীর নিয়ে আমাকে বদলে দিতে।

আমার নিয়তি বসবাস করে তার ভিতরে
আমার আকাঙ্ক্ষাগুলি তাকিয়ে থাকে তার দিকে
আর আমি আমার কবিতার লাবন্য দিয়ে
ঢেকে রাখি তাকে আমার হলদে পাখি সে ।

কষ্টগুলো ভাগ করে নেয় আধাআধি

শাহ জামাল উদ্দিন

বুকের কাছে মনের পাশে হলদেপাখি
আমার আছে
ভালোবাসি শুধুই তাকে
ময়না টিয়া আশেপাশে সামনে দেখি ময়ূর নাচে
তবু আমার হলদেপাখি মন যে টানে ।

যখন আমি কষ্টে থাকি
কষ্টগুলো ভাগ করে নেয় আধাআধি
আমার বুকে মাথা রাখে দুঃখ পেলে ।

নৃত্য পাগল পা দুটো তার চলতে থাকে
উথাল পাথাল ঝড় এলে
সবকিছু তার সামলে নিতে ।

রাত্রি যখন ঘিরে রাখে অন্ধকারে
এই আমাকে
জলভরা তার দু' চোখ দেখে
জোছনা এসে আদর করে ।

বুক ভরে দেয় ভালোবাসার উপহারে
এমনি করে
হলদেপাখি উড়ে আসে বারে বারে
আমার কাছে দিনরাতে ।

তোমার জন্যই

শাহ জামাল উদ্দিন

আমার চার ভাগের তিন ভাগ তুমি
যেমন পৃথিবীর
চার ভাগের তিন ভাগ পানি ।

তুমি উত্তরে দক্ষিণে পশ্চিমে
পূর্বের সবখানে
বেদনার সিঁড়ি বেয়ে নীচে নেমে তোমাকেই দেখি
সুখের সাগরে ডুব দিয়ে দেখি
সেখানেও আছ তুমি, আমি মিথ্যে বলিনি ।

তোমার জন্যই -
আজও আমার সকাল এমন সবুজ হয়
তোমার জন্যই -
এ নদী শান্ত বয়ে যায়।

অনেক তারার মাঝে একটি তারা তুমি
তোমাকে দেখেই নিঃশ্চিন্তে ঘুমিয়ে পড়ি আমি ।

সমগ্র জীবন পার করে
তোমাকে পেলাম ফিরে
একটা মলিন চিঠির ভিতরে ।

তবুও আমার তুমি-
তোমার জন্যই এখন আমি
সাহসে ভর উড়তে পারি ।

কী করে কবিতা লিখি

শাহ জামাল উদ্দিন

কাদের দীর্ঘশ্বাসে কালো হয়ে গেছ পুড়ে পুড়ে
তোমার আশেপাশে
ওদেরই কি প্রেতাত্মা ঘোরে
তাহলে কবিতা লিখি কী করে ।

ভালোবাসার রঙ গোলাপি
ভুলে গেছ তুমি
তাহলে কী করে কবিতা লিখি ।

যখন সেগুনবাগিচার রাস্তা দিয়ে
একা একা হেঁটে গেছি আমি
তখন সেখানে ছিলেনা তুমি
তাহলে কী করে কবিতা লিখি !

কবি পরিচিতি

BanglaKobita

শাহ জামাল উদ্দিন ১৯৬২ সালের ১লা জানুয়ারী ফরিদপুর শহরে জন্মগ্রহন করেন। তার পৈত্রিক নিবাস বর্তমান গোপালগঞ্জ জেলার মুকসুদপুর উপজেলার দিগনগর গ্রামে। কিশোর বয়সে প্রাথমিক লেখাপড়া শুরু নিজ গ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। কয়েক বছর তিনি কুষ্টিয়া শহরে লেখাপড়া করেন।

১৯৭৭ সালে দিগনগর বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় হতে এস.এস.সি এবং ১৯৭৯ সালে সরকারি রাজেন্দ্র কলেজ বিজ্ঞান বিভাগ হতে এইচএসসি পাশ করেন। ১৯৮৪ সালে ফরিদপুর পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট হতে ১ম বিভাগে ডিপ্লোমা-ইন-ইঞ্জিনিয়ারিং (যন্ত্রকৌশল) পাশ করেন। প্রকৌশলী হিসেবে তিনি কতিপয় বেসরকারী প্রতিষ্ঠানে কয়েক বছর চাকুরী করার পর দুরারোগ্য ক্যান্সার ব্যাধিতে ( হজকিং লিম্ফোমা) আক্রান্ত হলে চিকিৎসারত অবস্থায় চাকুরী ছেড়ে দেন। বর্তমানে আল্লাহর অপার মহিমায় সুস্থ হয়ে ব্যবসার সাথে জড়িত আছেন। মূলত তিনি কবি। কবিতা লেখা তার পেশা নয়-নেশা। বর্তমানে তিনি নিরন্তর লিখে চলেছেন। “ স্বপ্নের সিঁড়ি আমার প্রথম ভালোবাসা ” এবং “ ছুঁয়ে দেখি ভোরের নদী ” তার প্রকাশিত গ্রন্থ। এছাড়াও কয়েকটি কবিতার বই প্রকাশের পথে। বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় লিখে চলেছেন এবং কতিপয় সাহিত্য সংস্কৃতি প্রতিষ্ঠানের সাথে জড়িত

ফেসবুক পেইজ

কবিতা আবৃত্তি