আবৃত্তি

শাহ জামাল উদ্দিন

আমি তোমাকে আবৃত্তি করি প্রতিদিন
অন্ধকারে আলোতে সমুখে স্বপ্নে
ঝড়ে বৃষ্টিজলে তুমি থাকো যেখানে ।

অথচ আবৃত্তি করা হলো না আজ তোমাকে
আলোঝলমল ষ্টেজে- এখানে
তুমি কি ঐ সব কঠিন তারকা অভিনেতাদের মাঝে
আসতে লজ্জা পাচ্ছিলে তোমার কোমল পায়ে
যারা শুনতে চায়না দেখতেই বেশি ভালোবাসে !

সমস্ত দূরত্ব ভেদ করে আমি তোমাকে আবৃত্তি করি
উত্তর মেরু দক্ষিণ মেরু যেখানেই থাক তুমি ।

আজ কোথাও খুঁজে পাইনি তোমাকে
মনটা ওলট পালট করে
তাই চলে এসেছি সেখান থেকে
আমার আবৃত্তি অসমাপ্ত রেখে ।

আমি তোমাকে আবৃত্তি করি প্রতিদিন
অন্ধকারে আলোতে সমুখে স্বপ্নে
ঝড়ে বৃষ্টিজলে তুমি থাকো যেখানে ।

অথচ ভালোবাসি বলেনি একবার

শাহ জামাল উদ্দিন

কয়েকটি পাতার মত ঝরে গেছে জীবন থেকে
কতগুলো সবুজ মেয়ে
এখনো একটু একটু ব্যথা লাগে
এখনো তাদের পায়ের চিহ্ন দেখি মাটিতে
আমার ঘরে ফেরার পথে
তুমিও কি ছিলে তাদের মধ্যে
যাদের দেখতাম আমি গোলবারান্দায় দাড়িয়ে ।

কখনো চুল খুলে কিশোরী মেয়ে বৃষ্টিতে ভিজে
কাগজের নৌকা ভাসাতো জলে
সেই নৌকা আজো ভাসে দু'চোখে।

সেই সব সবুজ পাতা
আজো কুড়াতে যাই শৈশবের কাদামাটিতে
আমাকে পারেনা কেউ চিনতে
বারবার ফেরৎ পাঠায় অন্ধকারে ।

কতদিন হয়ে গেল
অথচ ভালোবাসি বলেনি একবারও
সবুজ মেয়েগুলো অযথাই ঝরে গেল ।

প্রচ্ছদ

শাহ জামাল উদ্দিন

যদি শিল্পী হতাম
তোমার বইয়ের প্রচ্ছদ এঁকে দিতাম।

এমনি করে তুলির তিনটি আঁচড়ে
আঁকতাম একটি নদী
সাড়ে তিন আঁচড়ে
একটি আলুথালু চুলে একপেচে শাড়ি পরা কিশোরী
আর ঠিক আড়াই আঁচড়ে
আকাশে একটি পাখি ।

তারপর একটু তেরসা করে প্রথমে কবির‌ নাম
তার নীচে বইটির নাম
এক অখন্ড রেখায় লিখে দিতাম।

মৃত্যু

শাহ জামাল উদ্দিন

ঘুরেফির প্রতিদিন প্রশ্ন জাগে ইদানিং
মৃত্যুর পরে কবরের অন্ধকারে
কেমনে একাকী রবো তোমাদের ছেড়ে।

যদি উড়ে যাই আকাশে ভেসে বেড়াই বাতাসে
তোমাদের দেখে দেখে দিন কাটাবো
আকাশের তারা হয়ে জ্বলে রইবো।

যদি মনে পড়ে আমাকে
সকাল সাঁঝে কাজের মাঝে
তাকিয়ে দেখো আকাশ পানে
একটি তারা এসে আলো দিবে
আর ভালোবাসায় ভরিয়ে দেবে তোমাকে।

আকাশে আমিও দেখেছি আমার মাকে
কাছে এসে বলেছিল
আজও ভালোবাসি তোমাকে।

কবি পরিচিতি

BanglaKobita

শাহ জামাল উদ্দিন ১৯৬২ সালের ১লা জানুয়ারী ফরিদপুর শহরে জন্মগ্রহন করেন। তার পৈত্রিক নিবাস বর্তমান গোপালগঞ্জ জেলার মুকসুদপুর উপজেলার দিগনগর গ্রামে। কিশোর বয়সে প্রাথমিক লেখাপড়া শুরু নিজ গ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। কয়েক বছর তিনি কুষ্টিয়া শহরে লেখাপড়া করেন।

১৯৭৭ সালে দিগনগর বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় হতে এস.এস.সি এবং ১৯৭৯ সালে সরকারি রাজেন্দ্র কলেজ বিজ্ঞান বিভাগ হতে এইচএসসি পাশ করেন। ১৯৮৪ সালে ফরিদপুর পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট হতে ১ম বিভাগে ডিপ্লোমা-ইন-ইঞ্জিনিয়ারিং (যন্ত্রকৌশল) পাশ করেন। প্রকৌশলী হিসেবে তিনি কতিপয় বেসরকারী প্রতিষ্ঠানে কয়েক বছর চাকুরী করার পর দুরারোগ্য ক্যান্সার ব্যাধিতে ( হজকিং লিম্ফোমা) আক্রান্ত হলে চিকিৎসারত অবস্থায় চাকুরী ছেড়ে দেন। বর্তমানে আল্লাহর অপার মহিমায় সুস্থ হয়ে ব্যবসার সাথে জড়িত আছেন। মূলত তিনি কবি। কবিতা লেখা তার পেশা নয়-নেশা। বর্তমানে তিনি নিরন্তর লিখে চলেছেন। “ স্বপ্নের সিঁড়ি আমার প্রথম ভালোবাসা ” এবং “ ছুঁয়ে দেখি ভোরের নদী ” তার প্রকাশিত গ্রন্থ। এছাড়াও কয়েকটি কবিতার বই প্রকাশের পথে। বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় লিখে চলেছেন এবং কতিপয় সাহিত্য সংস্কৃতি প্রতিষ্ঠানের সাথে জড়িত

ফেসবুক পেইজ

কবিতা আবৃত্তি