হাসি আপা

শাহ জামাল উদ্দিন

কত প্রিয়জন চলে গেল একে একে চিরতরে
এইতো সেদিন স্নেহমাখা শেষ কথা
বলে গেল আমাদের হাসি আপা
যেন এক লাইনের একটা কবিতা,
" স্বাক্ষর রেখে যেও কবিতায় "
ভালো লাগে আমার তোমার কবিতা।

যারা ভালোবাসে তারা রয়ে যায়
বুকের ভেতরে
উঁকি দেয় মনের জানালা দিয়ে
একা একা এই যে বসে থাকা আমি শুনতে পাই
তাদের কথা
অথচ চারিদিকে ভয়ানক শুন্যতা
তবু মনে হয় বাড়ি ভর্তি ঐ যে তাদের যাওয়াআসা ।

আমি চিৎকার করলেও তারা
শোনেনা আমার কথা
যেন একজোড়া মাছরাঙা পাখির মত
পাখা মেলে উড়ে যায় তারা
প্রিয়জন ছিল যারা
অতঃপর কোনদিন হয় না আর দেখা ।

কত প্রিয়জন চলে গেল একে একে চিরতরে
এইতো সে দিন স্নেহমাখা শেষ কথা
বলে গেল আমাদের হাসি আপা
যেন এক লাইনের একটা কবিতা,
" স্বাক্ষর রেখে যেও কবিতায় "
ভালো লাগে আমার তোমার কবিতা।

কত দুরে থাক তুমি

শাহ জামাল উদ্দিন

কতটা পথ পাড়ি দিলে পাবো তোমাকে
ঝড়ের বেগ কতটা হলে
মুহুর্তে বাতাস তোমার কাছে পৌঁছে দিবে আমাকে।

আমি দেখেছি তোমাকে বহুদুর সমুদ্রপাড়ে
আমার জানালা দিয়ে
তোমার শৈশব ভূমির কাছাকাছি ছিল শান্ত নদী
এখন সমুদ্রের কাছে কী চাও তুমি ?

এখনো কি জানালার মত খুলে যায়
তোমার চোখ দুটি বৃষ্টি নামে যদি
এখনো কি আকাশ দেখ তুমি
মধ্যরাতে ঘুম ভাঙে যদি ?

কতটা পথ পাড়ি দিলে পাবো তোমাকে
ঝড়ের বেগ কতটা হলে
মুহুর্তে বাতাস তোমার কাছে পৌঁছে দিবে আমাকে ।

একা একা

শাহ জামাল উদ্দিন

সময়ের অজস্র পাতা ঝরে গেছে এতদিনে
শিউলি ফুলের মতন
আমার কথা ছড়িয়ে পড়েছে মাটিতে
একা একা বসে আছি
ঝরা পাতার নিঃসর্গে ।

যদি কোন গোপন রত্রিতে
সেই পাখি এসে বসে এই বাগানে
তাকে আমি নিয়ে যেতাম
আমার চেতনার প্রত্যান্ত প্রদেশে -ভালোবেসে ।

কষ্ট

শাহ জামাল উদ্দিন

তোমার কষ্ট দেখে
আমি প্রতিদিন মরে যাই কতবার
তবুও তোমার জন্যই প্রান ফিরে পাই আবার
দুঃখময় দুই চোখ দিয়ে তোমাকেই দেখি বারবার
আমি ছদ্মবেশ ধারন করে
কাকেদের উত্থান দেখি অথচ একটিবার
তোমাকে বলতে পারি নাই ভালোবাসি ।

এখানে দেখি জোছনায় জোনাকি জ্বলে
শালিকের বাসা আছে হিজলের গাছে
তুমি ব্যস্ত থাক ঘরজুড়ে খোঁপা খুলে
পৃথিবী নির্বিকার তাকিয়ে থাকে আমার দিকে
তীক্ষ্ণ ভর্ৎসনায় প্রকৃতি উৎকট নাচে ।

আমার অস্তিত্ব চাপা পড়ে আছে
অস্বস্তির স্তুপের নীচে
বৃষ্টি পারেনা আমাকে ভেজাতে
অথচ তোমার কান্না
ভিজিয়ে দেয় বারে বারে আমার একলা ঘরে ।

কবি পরিচিতি

BanglaKobita

শাহ জামাল উদ্দিন ১৯৬২ সালের ১লা জানুয়ারী ফরিদপুর শহরে জন্মগ্রহন করেন। তার পৈত্রিক নিবাস বর্তমান গোপালগঞ্জ জেলার মুকসুদপুর উপজেলার দিগনগর গ্রামে। কিশোর বয়সে প্রাথমিক লেখাপড়া শুরু নিজ গ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। কয়েক বছর তিনি কুষ্টিয়া শহরে লেখাপড়া করেন।

১৯৭৭ সালে দিগনগর বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় হতে এস.এস.সি এবং ১৯৭৯ সালে সরকারি রাজেন্দ্র কলেজ বিজ্ঞান বিভাগ হতে এইচএসসি পাশ করেন। ১৯৮৪ সালে ফরিদপুর পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট হতে ১ম বিভাগে ডিপ্লোমা-ইন-ইঞ্জিনিয়ারিং (যন্ত্রকৌশল) পাশ করেন। প্রকৌশলী হিসেবে তিনি কতিপয় বেসরকারী প্রতিষ্ঠানে কয়েক বছর চাকুরী করার পর দুরারোগ্য ক্যান্সার ব্যাধিতে ( হজকিং লিম্ফোমা) আক্রান্ত হলে চিকিৎসারত অবস্থায় চাকুরী ছেড়ে দেন। বর্তমানে আল্লাহর অপার মহিমায় সুস্থ হয়ে ব্যবসার সাথে জড়িত আছেন। মূলত তিনি কবি। কবিতা লেখা তার পেশা নয়-নেশা। বর্তমানে তিনি নিরন্তর লিখে চলেছেন। “ স্বপ্নের সিঁড়ি আমার প্রথম ভালোবাসা ” এবং “ ছুঁয়ে দেখি ভোরের নদী ” তার প্রকাশিত গ্রন্থ। এছাড়াও কয়েকটি কবিতার বই প্রকাশের পথে। বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় লিখে চলেছেন এবং কতিপয় সাহিত্য সংস্কৃতি প্রতিষ্ঠানের সাথে জড়িত

ফেসবুক পেইজ

কবিতা আবৃত্তি