ভুল ভেঙে গেছে

শাহ জামাল উদ্দিন

শুন্যতার মুখোমুখি দাঁড়িয়ে কেটেছে
আমার কতকাল
অন্ধের মত আশাবাদী হয়ে
সাদা লাঠি হাতে কোথায় এসেছি আজ
এখানে সবাই অশ্লীল অভিশাপ দেয়
করুনার চোখে তাকায় ।

ভেবেছিলাম তোমার কাছে-
একটু বৃষ্টি নিবো চেয়ে আর কিছুটা সূর্যের আলো
সবুজ বাতাস নিবো দুচোখে নদী নিবো
দিকেদিকে এত চক্রান্ত
আমি কি ভাবে তোমার কাছে এতকিছু চাবো ।

অবশেষে ভিখারীর মত দুহাত পেতে
শুধু নিলাম চেয়ে
রাত্রি জাগার ক্লান্তিটুকু দিওনা আমাকে ।

গুমটিঘর

শাহ জামাল উদ্দিন

এইসব দিন বদলে ফেলার
জীবনের গল্প বলার
মিলন মেলার এ পাড়ার
এই সেই ঘর।

নক্ষত্রের আলো ভরা রাতে
অথবা দারুণ বৃষ্টিতে
তারা আসে নিশিথের অন্ধকারে
কুয়াশার পর্দা ছিঁড়ে
ফাল্গুনের হাওয়ায় চড়ে।

ঈগল চোখের পাহারায়
রাত পার করে দেয়।

সকলে আপন এখন যারা ছিল পর
আমাদের প্রিয় গুমটিঘর।

তৃতীয় প্রজন্ম

শাহ জামাল উদ্দিন

হেমন্তের এই রোদে এক চেনা মুখ দেখি
প্রতীক্ষায় ছিলাম আমি
আমার প্রজন্ম তুমি।

অনেক শতাব্দী পার করে তুমি এলে তার পরে
এখানে কাদা-মাটি, চোরাবালি, ঝড়-বৃষ্টি
শান্তির চেয়ে হাহাকার বেশী।

এখনে রাতের চিৎকারে ঘুম ভাঙে
যেতে হয় পারিবারিক বনবাসে।

আমি আশাবাদ নিয়ে যাব এই পৃথিবী থেকে
আমার পূর্বসূ্রী
উত্তরসূরীদের ক্ষত শুকাবে
তোমার শুভ ইঙ্গিতে
তুমি আসবে এই অঙ্গীকার নিয়ে ।

হে সদ্যজাত স্বাগত তোমাকে।

পাহারা

শাহ জামাল উদ্দিন

রাত জাগা পাখির মতোন
জেগে থাকি পাহারায়
লাঠি আর বাশিঁ হাতে ঘর ছেড়ে রাস্তায়
দেখি আমি কে আসে কে যায় ।

বাঁশির শব্দ পৌছে দেই
নৈঃশব্দের সীমানায়
নিশাচর হাত দেয় জানালায়
প্রিয়দের ঘুম ভেঙে য়ায়
সারারাত জেগে থাকি সতর্ক পাহারায় ।

বিষন্ন রত্রিতে বৃষ্টির ফোঁটা পড়ে
কখনো ঘাম ঝরে
রাত কাটে কুয়াশার অন্ধকারে ।

ভাই বোন প্রিয়জন ঘুমায় যখন
থাকি আমি পাহারায় সারাক্ষণ ।

কবি পরিচিতি

BanglaKobita

শাহ জামাল উদ্দিন ১৯৬২ সালের ১লা জানুয়ারী ফরিদপুর শহরে জন্মগ্রহন করেন। তার পৈত্রিক নিবাস বর্তমান গোপালগঞ্জ জেলার মুকসুদপুর উপজেলার দিগনগর গ্রামে। কিশোর বয়সে প্রাথমিক লেখাপড়া শুরু নিজ গ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। কয়েক বছর তিনি কুষ্টিয়া শহরে লেখাপড়া করেন।

১৯৭৭ সালে দিগনগর বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় হতে এস.এস.সি এবং ১৯৭৯ সালে সরকারি রাজেন্দ্র কলেজ বিজ্ঞান বিভাগ হতে এইচএসসি পাশ করেন। ১৯৮৪ সালে ফরিদপুর পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট হতে ১ম বিভাগে ডিপ্লোমা-ইন-ইঞ্জিনিয়ারিং (যন্ত্রকৌশল) পাশ করেন। প্রকৌশলী হিসেবে তিনি কতিপয় বেসরকারী প্রতিষ্ঠানে কয়েক বছর চাকুরী করার পর দুরারোগ্য ক্যান্সার ব্যাধিতে ( হজকিং লিম্ফোমা) আক্রান্ত হলে চিকিৎসারত অবস্থায় চাকুরী ছেড়ে দেন। বর্তমানে আল্লাহর অপার মহিমায় সুস্থ হয়ে ব্যবসার সাথে জড়িত আছেন। মূলত তিনি কবি। কবিতা লেখা তার পেশা নয়-নেশা। বর্তমানে তিনি নিরন্তর লিখে চলেছেন। “ স্বপ্নের সিঁড়ি আমার প্রথম ভালোবাসা ” এবং “ ছুঁয়ে দেখি ভোরের নদী ” তার প্রকাশিত গ্রন্থ। এছাড়াও কয়েকটি কবিতার বই প্রকাশের পথে। বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় লিখে চলেছেন এবং কতিপয় সাহিত্য সংস্কৃতি প্রতিষ্ঠানের সাথে জড়িত

ফেসবুক পেইজ

কবিতা আবৃত্তি