ভান করি

শাহ জামাল উদ্দিন

কাকের গলায় ডাকছি আমি
হিসেব করে রোজই দেখি এই জীবনের ক্ষয়ক্ষতি
কোথায় আমার হারিয়ে যাওয়া ঈদের খুশি
মায়ের মুখের মিষ্টি হাসি ।

এক টুকরো মাংস নিয়ে করছে যারা কাড়াকাড়ি
কোন খুশি আজ তাদের বাড়ি
সেলাই করে
পড়ছে যারা ছেঁড়া শাড়ি ।

ঝর্নাবিবি কিনে দেখ দামি শাড়ি সোনা কিনে ভরি ভরি
ঐ দেখনা তাদের আছে নতুন গাড়ি
তারা নাকি কালো টাকা সাদা করার
বিদ্যা জানে যাদুকরী ।

জং পড়া সেই ছোট্ট বেলার আনন্দকেই ঘষে ঘষে
ছুরির মত ধার করি
আমি এখন ঈদের খুশির ভান করি ।

তোমাকে ছাড়া

শাহ জামাল উদ্দিন

তোমায় ছাড়া চলতে যদি না পারি
বিন্দু বিসর্গ এক করি
কোনটা নদী কোনটা পুকুর
চিনতে যদি ভুল করি ।

ইস্টিশনে রেলগাড়ি উঠতে যদি দেড়ি করি
যদি দেখি অন্য গাড়ি
ঘুম জড়ানো চোখ দুটোকে
রুখতে যদি না পারি পথের মধ্যে ঘুমিয়ে পড়ি ।

কন্ঠ আমার রুদ্ধ করে
শত্রু যদি ঘিরে ধরে গুজব ছড়ায় চারিধারে ।

তাহলে কি ডাকবে তুমি পিছন ফিরে
তাহলে কি হাতটা ধরে
নিয়ে যাবে কিছু দুরে
জীবন যদি পথ হারায় হটাৎ যদি থমকে দাঁড়ায় ।

শান্ত থাক

শাহ জামাল উদ্দিন

আর কটা দিন না হয় তুমি এমনি থাক
বদলে যাওয়ার ইচ্ছাটাকে শান্ত রাখ ।

ইচ্ছেগুলি ছুটাছুটি করছে কেন
থামতে বলো
বুঝতে পারি তাদের তুমি কান্না শোন
নির্জনে তাই ডেকে নিয়ে ভুল করেছ শুধুই বলো
বলতে পারো সময় হলে সবকিছুই
এসে যাবে শীতের মত ।

কেন তুমি শিকার খোঁজ মনের ভিতর বিড়াল আঁক
আর কটা দিন না হয় তুমি ইচ্ছে গুলি
আগের মতই বুকের ভিতর লুকিয়ে রাখ ।

নতুন জামা নতুন শাড়ি নতুন গাড়ি গয়নাগাটি
কেনাকাটার ইচ্ছেগুলি
আর কটা দিন না হয় তুমি
নতুন প্রেমের সোনার সুতায় বেঁধে রাখ ।

আর কটা দিন না হয় তুমি এমনি থাক
বদলে যাওয়ার ইচ্ছাটাকে শান্ত রাখ ।

পরান পাখি

শাহ জামাল উদ্দিন

আমার আছে একটি পাখি
নাম দিয়েছি " পরানপাখি "
তারই খুশি তারই হাসি দিনেরাতে খুঁজতে থাকি
গায়ের গন্ধ নিয়ে দেখি এ যে আমার
সেই দিনের সেই হলদে পাখি ।

আমার জন্য পার হয়েছে কত কত দুঃখ নদী
ক্লান্ত যে তার ডানা দুটি কষ্টে আছে আমার পাখি ।

যখন আমি ডুবতে থাকি
শক্তি দিয়ে টেনে তুলে আমার পাখি
যখন আমি কষ্টে থাকি
ঠোঁটে করে নিয়ে আসে মিষ্টি হাসি ।

সুখের সময় তাইতো আমি হন্যে হয়ে
খুঁজতে থাকি
কোথায় আমার পরান পাখি ।

কবি পরিচিতি

BanglaKobita

শাহ জামাল উদ্দিন ১৯৬২ সালের ১লা জানুয়ারী ফরিদপুর শহরে জন্মগ্রহন করেন। তার পৈত্রিক নিবাস বর্তমান গোপালগঞ্জ জেলার মুকসুদপুর উপজেলার দিগনগর গ্রামে। কিশোর বয়সে প্রাথমিক লেখাপড়া শুরু নিজ গ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। কয়েক বছর তিনি কুষ্টিয়া শহরে লেখাপড়া করেন।

১৯৭৭ সালে দিগনগর বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় হতে এস.এস.সি এবং ১৯৭৯ সালে সরকারি রাজেন্দ্র কলেজ বিজ্ঞান বিভাগ হতে এইচএসসি পাশ করেন। ১৯৮৪ সালে ফরিদপুর পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট হতে ১ম বিভাগে ডিপ্লোমা-ইন-ইঞ্জিনিয়ারিং (যন্ত্রকৌশল) পাশ করেন। প্রকৌশলী হিসেবে তিনি কতিপয় বেসরকারী প্রতিষ্ঠানে কয়েক বছর চাকুরী করার পর দুরারোগ্য ক্যান্সার ব্যাধিতে ( হজকিং লিম্ফোমা) আক্রান্ত হলে চিকিৎসারত অবস্থায় চাকুরী ছেড়ে দেন। বর্তমানে আল্লাহর অপার মহিমায় সুস্থ হয়ে ব্যবসার সাথে জড়িত আছেন। মূলত তিনি কবি। কবিতা লেখা তার পেশা নয়-নেশা। বর্তমানে তিনি নিরন্তর লিখে চলেছেন। “ স্বপ্নের সিঁড়ি আমার প্রথম ভালোবাসা ” এবং “ ছুঁয়ে দেখি ভোরের নদী ” তার প্রকাশিত গ্রন্থ। এছাড়াও কয়েকটি কবিতার বই প্রকাশের পথে। বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় লিখে চলেছেন এবং কতিপয় সাহিত্য সংস্কৃতি প্রতিষ্ঠানের সাথে জড়িত

ফেসবুক পেইজ

কবিতা আবৃত্তি