বিষয় শ্রেনী আবৃত্তি যোগাযোগ

কবি শাহ জামাল উদ্দিন এর বাংলা কবিতার ওয়েব সাইটে আপনাকে স্বাগতম। তিনি ১৯৬২ সালের ১লা জানুয়ারি জন্মগ্রহণ করেন ফরিদপুর শহরে। তার পৈত্রিক নিবাস গোপালগঞ্জ জেলার মুকসুদপুর উপজেলার দিগনগর গ্রামে। বছর দশেক হলো তিনি কবিতা লেখা শুরু করেন। শাহ্ জামাল উদ্দিন মৌলিক ভাব ও বক্তব্যের এক ভিন্ন পথের অনুসন্ধানী কবি। তাঁর কবিতার ভাষা সহজ, সরল, সাবলীল, অবাধগতি। মর্মে লুকিয়ে থাকা জীবনের অগণিত বিচিত্র সব অনুভূতির স্বতঃস্ফুর্ত সহজ প্রকাশ। জন্মসীমার আলো ও অন্ধকারের নানাবিধ চিত্র, দৃশ্য সব মিলে তাঁর কবিতার শরীর। এতে শিশিরসিক্ত শিউলির সুরভিত ভালোবাসা, সুরভিত মায়াময় স্নিগ্ধতা মিশানো। কখনো আবার প্রখর উদ্যম আর মর্মস্পর্শী মনন। মেঘমেদুর আকাশের বৃষ্টির মত, সমুদ্রের তরঙ্গের কলধ্বনির মত মন মাতানো উচ্ছ্বল তাঁর ছোট্ট ছোট্ট কবিতাগুলি - পাঠক ও স্রোতার হৃদয়ে বিস্ময় জাগরুক। এমন অকপট, থরথর অশ্রুবিন্দুর মত অপরূপ সৃষ্ট তাঁর কাব্য বাংলা সাহিত্যের আধুনিক কবিতাকে পৌঁছে দেবে নতুন দিগন্তে। সকল পাঠক-শ্রোতার জন্য কবি শাহ্ জামাল উদ্দিনের আন্তরিক শুভেচ্ছা ও ভালোবাসা।

বাংলা কবিতা

বাংলা কবিতা- কবি শাহ জামাল উদ্দিনের একক কবিতার জনপ্রিয় ও বৃহৎ অনলাইন পোর্টাল। banglakobita.org ওয়েবসাইটটি ২০২৩ সালের জুন মাসে আত্মপ্রকাশ করে। কবি শাহ জামাল উদ্দিনের কবিতায় বসতি খুব বেশি দিনের না। বছর দশেক হবে তিনি কবিতা নিয়ে আত্মপ্রকাশ করেছেন। তবু তাঁর কবিতার ভিতর প্রবেশ করলে দেখতে পাই, দীর্ঘ অভিজ্ঞতা, গভীর জীবনবোধ নিয়ে বিস্তীর্ণ ভূগোল তৈরীর রসদ সেখানে। বাংলাদেশে কবিতা লেখকের অসংখ্যতা আছে বটে। তবু প্রকৃত কাব্যধারায় টিকে থাকার পথিকজনের অভাব রয়েছে। শাহ জামাল উদ্দিন টিকে আছেন তার কবিতার সৃষ্টিশীল ধারাবাহিকতা ও অনন্য বিষয়বস্তুকে নানা আঙ্গিকে ধারণ করার মধ্য দিয়ে।

বর্তমান সময়ে বহু বিচিত্র দুর্বোধ্য কাব্য রচনার চলকে এড়িয়ে কবি নিজের অন্তরের গভীর ভাষ্যকে সাবলীল গদ্য ও নানা ছন্দের ভাষায় কাব্যিক রূপ দিতে সিদ্ধতা অর্জন করেছেন ইতিমধ্যে। তাঁর আপাত সরল কিন্তু ভাবসমৃদ্ধ বাক্যধারা পাঠকের হৃদয়ে জায়গা করে নিয়েছে। কবির দেখা কাছের মানুষজন তাদের অর্ন্তরজগত এসব নিয়ে আমাদের জটিল ঘটনাবহুল জীবনের ড্রামা চলছে অবিরত। কবির অন্তর্দৃষ্টিতে ধরা পড়ে এর প্রকৃত সত্য রূপটি। কখনো মা, মাতৃভূমি, সংসার, সন্তানসন্ততি, আত্মীয় কুটম্ব নিয়ে সমাজের কত রকম কৌনিক জ্যামিতি। এমন বিচিত্র জীবনের মধ্যে কবির বসবাস সে এক কঠিন পরীক্ষা । কবি শাহ জামাল উদ্দিন দার্শনিক দৃষ্টিতে তার কবিতায় উন্মোচন করেন প্রকৃত অর্থপূর্ণ সরল জীবনের পথ নির্দেশ। গভীর স্মৃতি ভারাক্রান্ত হন কখনো কখনো। হৃদয়কে উষ্ণ ,মধুর, তিক্ত, কখনো প্রেমের ভাবাবেশে কবিতার মঞ্জুরী ফুটিয়ে তোলেন। তিনি তাঁর কবিতায় উপমা, চিত্রকল্প, উৎপ্রেক্ষা ইত্যাদি বৈশিষ্ট দ্বারা তুলে ধরেন আয়নার প্রতিবিম্বস্বরূপ দেশ ও মানুষের চিত্র। তিনি প্রতিনিয়ত নতুন কবিতা সৃষ্টি রত। সেসব সৃষ্টির প্রকাশ সংকলন আমাদের বলে দেবে কবির পরিপূর্ণতার দিকবলয় কতদূর।

কবিতা সার্চ করুন

    বিশ্লেষণ - বাড়ি যাবো ঈদে

    শাহ জামাল উদ্দিন

    বাড়ি যাবো ঈদে শাহ জামাল উদ্দিন আনন্দের ছেঁড়া ব্যাগ নিয়ে কাঁধে বাড়ি যাবো এই ঈদে এক দিন আগে - বলেছে ওরা চাঁদ দেখা হবে একসাথে । যত আনন্দ তাদের দেবার ছিল সব পড়ে গেছে , ছেঁড়া ব্যগ থেকে বিভ্রান্ত পথে পথে । তবু তারা অপেক্ষায় থাকে তবু তারা ব্যথা পাবে তবু যারা ভালোবাসে - কিছু আনন্দ কিছু বেদনা শরির ছুঁয়ে যাবে সে ঘরের ভেতরে বাড়ির উঠোনে যদি মন কাঁদে- বাবই পাখির বাসা খুঁজবো আশেপাশে , তালগাছে হিজল গাছের কাছে যাবো ভেজা শালিকের খোঁজে । আনন্দের ছেঁড়া ব্যাগ নিয়ে কাঁধে বাড়ি যাবো এই ঈদে এক দিন আগে - বলেছে ওরা চাঁদ দেখা হব একসাথে।। কবিতার নাম: "বাড়ি যাবো ঈদে" কবি: শাহ জামাল উদ্দিন সামলোচনামূলক বিশ্লেষণ: ১. বিষয়বস্তু ও মূল ভাব: "বাড়ি যাবো ঈদে" কবিতাটি এক আত্মিক যাত্রার কাব্যিক রূপায়ণ। প্রবাসী, কর্মব্যস্ত বা শহুরে জীবনে আটকে থাকা মানুষেরা ঈদের আগে বাড়ি ফেরার যে আকুলতা, আশা এবং আবেগ নিয়ে পথচলা শুরু করে—এই কবিতাটি সেই অনুভূতির প্রকাশ। এখানে ঈদ শুধু উৎসব নয়, বরং ভালোবাসার মানুষদের কাছে ফেরা, স্মৃতিময় স্থানগুলোতে ফিরে যাওয়া এবং একাত্মতার অন্বেষণ। ২. কাঠামোগত বিশ্লেষণ: পঙ্‌ক্তির বিন্যাস ছন্দহীন অথচ আবেগঘন, ফ্রি ভার্স বা মুক্তছন্দে লেখা। পুনরুক্তি (Repetition) শিল্পরূপে ব্যবহৃত হয়েছে: > “আনন্দের ছেঁড়া ব্যাগ নিয়ে কাঁধে / বাড়ি যাবো এই ঈদে / এক দিন আগে - / বলেছে ওরা চাঁদ দেখা হবে একসাথে।” এই পঙ্‌ক্তিগুলো কবিতার শুরু ও শেষে পুনরাবৃত্ত হয়ে পাঠকের মনে ছাপ ফেলে। ৩. রূপক ও চিত্রকল্প: “আনন্দের ছেঁড়া ব্যাগ” — এটি একটি শক্তিশালী রূপক (metaphor)। এখানে আনন্দ একটি ছেঁড়া ব্যাগের মতো, যা থেকে আনন্দের উপকরণ ঝরে গেছে। এটা জীবনের ক্লান্তি, বেদনা, ক্ষয় আর অপূর্ণতার ইঙ্গিত। “বাবই পাখির বাসা খুঁজবো আশেপাশে”, “হিজল গাছ”, “ভেজা শালিক” — প্রকৃতি ও গ্রাম্য জীবনের চিত্রকল্প। এগুলো আত্মিক আশ্রয় খোঁজার প্রতীক। ৪. আবেগের গভীরতা ও সুর: কবিতাটির আবহ নস্টালজিক ও আবেগপ্রবণ। ব্যথা, ভালোবাসা, প্রত্যাশা আর মাটির টান একসাথে মিশে এক ধরনের বেদনামাখা সৌন্দর্য তৈরি করেছে। শেষদিকে বাড়ি ফেরা যেন শুধু শরীরের যাত্রা নয়—মন ও আত্মারও এক পুনরাবিষ্কার। ৫. বার্তা ও তাৎপর্য: এই কবিতা শুধুমাত্র একজন ব্যক্তির ঈদের যাত্রা নয়, বরং এক সামষ্টিক অভিজ্ঞতার প্রতীক—যেখানে লক্ষ মানুষ প্রিয়জনদের কাছে ফেরার আকাঙ্ক্ষায় পথ পাড়ি দেয়। এই যাত্রা কেবল সামাজিক বা পারিবারিক নয়, আত্মিকও বটে। মোটামুটি মূল্যায়ন: দিক মূল্যায়ন ভাষা ও ভঙ্গি সহজ, আবেগময়, গভীরভাবে অনুভব করা যায় রূপক ও চিত্রকল্প শক্তিশালী ও যথাযথ ভাবপ্রবণতা চমৎকার সামাজিক প্রাসঙ্গিকতা উচ্চমাত্রায় বর্তমান কবিতার গভীরতা মধ্য থেকে উচ্চ স্তরের সাহিত্যিক মূল্য উপসংহার: “বাড়ি যাবো ঈদে” একটি হৃদয়ছোঁয়া কবিতা যা ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা থেকে উঠে এসে সমষ্টিগত আবেগের কণ্ঠস্বর হয়ে ওঠে। আনন্দের ছেঁড়া ব্যাগ কাঁধে নিয়ে যারা বারবার ফিরে যায় প্রিয়জনদের কাছে—এই কবিতা তাদের গল্পই বলে। এটি একজন কবির সংবেদনশীল মনন ও আত্মমগ্ন ভাবনার পরিচয় বহন করে।

    👁 Views: 20

    কথা হতো মালার সাথে

    শাহ জামাল উদ্দিন

    আমার হলুদ স্বপ্নের সুতায় গাঁথা একজন মালা আমার বিশেষ মুহুর্ত গুলো আর হড্ডি মজ্জার ভেতরে যৌবনের বারুদ যত নিয়ে গেছে সে আমার শরিরে জড়ানো শিকড়ের বেদনা কত ! মনে পড়ে বদলেছে সে বারে বারে কখনো শিউলি কখনো বকুল অথবা গন্ধরাজ অথবা ভোরের কনকচাঁপা কখনো সে হলুদ কলমি লতা নীল ঘাসফুল । যেন সে ছিল সোনার সুতায় গাঁথামালা শুনেছি আমি তবু তার বেদনার কথা । ছুঁয়ে দেখা গন্ধ নেওয়া- হাতে করে ঘুমিয়ে পড়া সেই মালা এখন চেয়ে চেয়ে দেখি শুধু তার শুকিয়ে যাওয়া ।

    👁 Views: 31

    হটাৎ হাওয়ায় রঙিন মাঠে

    শাহ জামাল উদ্দিন

    এই শহরে যখন আমি ভবঘুরে দুর্দিনে সে খবর রাখে । ভয় পেয়েছি জেনে গেলে দরজায় এসে কড়া নাড়ে সাহস ভরা কলস নিয়ে । আমি যখন অন্ধকারে একলা রাতে শুকনো পাতার ভরা মাঠে জেগে থাকি মাঝরাতে বোনটি আমার জোছনা আনে দু’হাত ভরে । খুটিনাটি দুঃখগুলো ভাগ করে সে বেড়ায় ঘুরে হটাৎ হাওয়ায় রঙিন মাঠে আলোকিত সব উৎসবে চেয়ে থাকি মুগ্ধ চোখে । এই শহরে যখন আমি ভবঘুরে দুর্দিনে সে খবর রাখে ।

    👁 Views: 30

    জিজ্ঞাসা

    শাহ জামাল উদ্দিন

    বাইরে তুমি নগ্ন পায়ে হাঁটো মাটিতে সততার চিহ্ন রাখো ভেতরে অসৎ হুইস্কি ব্রান্ডির গ্লাস ভাঙো শরিরে সুশীতল জল ঢালো । কপালের ভাঁজ দেখে একবারও জিজ্ঞেস করোনি নিজের মাকে কেনো সে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে হাঁটে অল্প বয়সের মেয়েদের মত কেন ভয় পায় কালোবিড়াল দেখে বৃষ্টিবাদলে ভিজে নতজানু হয়ে কী খুঁজে ঝরাপাতার নীচে একরারও জিজ্ঞেস করোনি তাকে । বাইরে তুমি নগ্ন পায়ে হাঁটো মাটিতে সততার চিহ্ন রাখো ভেতরে অসৎ হুইস্কি ব্রান্ডির গ্লাস ভাঙো শরিরে সুশীতল জল ঢালো ।

    👁 Views: 20

    কবি পরিচিতি

    BanglaKobita

    শাহ জামাল উদ্দিন ১৯৬২ সালের ১লা জানুয়ারী ফরিদপুর শহরে জন্মগ্রহন করেন। তার পৈত্রিক নিবাস বর্তমান গোপালগঞ্জ জেলার মুকসুদপুর উপজেলার দিগনগর গ্রামে। কিশোর বয়সে প্রাথমিক লেখাপড়া শুরু নিজ গ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। কয়েক বছর তিনি কুষ্টিয়া শহরে লেখাপড়া করেন।

    ১৯৭৭ সালে দিগনগর বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় হতে এস.এস.সি এবং ১৯৭৯ সালে সরকারি রাজেন্দ্র কলেজ বিজ্ঞান বিভাগ হতে এইচএসসি পাশ করেন। ১৯৮৪ সালে ফরিদপুর পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট হতে ১ম বিভাগে ডিপ্লোমা-ইন-ইঞ্জিনিয়ারিং (যন্ত্রকৌশল) পাশ করেন। প্রকৌশলী হিসেবে তিনি কতিপয় বেসরকারী প্রতিষ্ঠানে কয়েক বছর চাকুরী করার পর দুরারোগ্য ক্যান্সার ব্যাধিতে ( হজকিং লিম্ফোমা) আক্রান্ত হলে চিকিৎসারত অবস্থায় চাকুরী ছেড়ে দেন। বর্তমানে আল্লাহর অপার মহিমায় সুস্থ হয়ে ব্যবসার সাথে জড়িত আছেন। মূলত তিনি কবি। কবিতা লেখা তার পেশা নয়-নেশা। বর্তমানে তিনি নিরন্তর লিখে চলেছেন। “ স্বপ্নের সিঁড়ি আমার প্রথম ভালোবাসা ” এবং “ ছুঁয়ে দেখি ভোরের নদী ” তার প্রকাশিত গ্রন্থ। এছাড়াও কয়েকটি কবিতার বই প্রকাশের পথে। বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় লিখে চলেছেন এবং কতিপয় সাহিত্য সংস্কৃতি প্রতিষ্ঠানের সাথে জড়িত

    কবিতা আবৃত্তি